নগরীতে গত বৃহস্পতিবার রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতেও কোথাও জলাবদ্ধতা দেখা যায়নি। সচরাচর আগের বছরগুলোতে এমন বৃষ্টিপাতে নগরীর বিভিন্ন নিচু এলাকা হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যেত। এবার ভারি বৃষ্টিতেও কোথাও পানি না উঠায় নগরবাসী স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে বৃষ্টির কারণে মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ইতোমধ্যে গতকাল পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, এবার ভারী বৃষ্টিতেও নগরীর মুরাদপুর, ২ নং গেট, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, প্রবর্তক মোড়, চকবাজার, কাপাসগোলা, হালিশহর, আগ্রাবাদ, পাথরঘাটা, ডিসি রোড, বাকলিয়া, ফুলতলা এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা যায়নি। অথচ গত কয়েক বছর ধরে এসব এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে নগরবাসীর ভোগান্তির শেষ ছিল না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিবন্দী থাকতো নিচু এলাকার মানুষ। এ বছর সেই চিত্র দেখা যায়নি। বাকলিয়া এলাকার বাসিন্দা হাছিনা আকতার বলেন, ভারী বৃষ্টিতে এবারই প্রথম আমার বাসায় পানি ঢুকেনি। আমাদের বাকলিয়ার ফুলতলার প্রতিটি বাসার নিচতলায় ভারী বৃষ্টি হলে পানি ঢুকতো। তবে নালা, নর্দমা ও খাল পরিষ্কার করার কারণে কোথাও পানি জমে ছিল না। আমাদেরও কষ্ট হয়নি।
ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা না হওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টাদের নিয়মিত মনিটরিংয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নালা–নর্দমা পরিষ্কারের তৎপরতার কারণে পানিপ্রবাহ নির্বিঘ্ন ছিল। বিশেষ করে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এবার বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে প্রথম পাঁচ মাসে এখন পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামে অন্তত আটটি সভা হয়েছে। এসব সভায় নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রামের সেবা সংস্থাগুলোর করণীয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এসব কাজ শেষ করতে মে মাস পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করে সিটি করপোরেশন, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড, সিডিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সেবা সংস্থাগুলো।
এদিকে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকালের তুলনায় আজ বৃষ্টির প্রবণতা কিছুটা কমবে। গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নগরীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ২২৮ মিলিমিটার। জানতে চাইলে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, ভারী বৃষ্টির আর শঙ্কা নাই। আগামীকাল (আজ) থেকে বৃষ্টি কমে আসবে। আগামী রোববার থেকে সূর্যের দেখা মিলবে। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্ন চাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।