ব্রিটেনের সমান বড় হিমবাহটি ভেঙে পড়বে!

| বুধবার , ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৮:১৫ পূর্বাহ্ণ

অ্যান্টার্কটিকার সবচেয়ে বড় হিমবাহগুলোর একটিতে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন। তারা বলছেন, থোয়েইটস হিমবাহের সামনের যে অংশটি পানিতে ভাসতে দেখা যাচ্ছে, আপাতত সেটি স্থির থাকলেও যেকোনো সময় এটি ভেঙে চৌচির হয়ে যেতে পারে; যেমন ফাটল ধরার পর ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়ে গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা এই হিমবাহটি পর্যবেক্ষণ করছেন। কারণ এটি দ্রুত গতিতে গলে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশালাকার এই হিমবাহ থেকে প্রতি বছরে পাঁচ হাজার টন বরফ মহাসাগরে মিশে যাচ্ছে। সামনের বছর একটি স্বয়ংক্রিয় ডুবোজাহাজ গিয়ে বিজ্ঞানীরা এই হিমবাহের নিচে গিয়ে পানির তাপমাত্রা, বর্তমান গতি ইত্যাদি নিযে আরও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করবে। খবর বিবিসি বাংলার।
সামনের বছর একটি স্বয়ংক্রিয় ডুবোজাহাজ গিয়ে বিজ্ঞানীরা এই হিমবাহের নিচে গিয়ে পানির তাপমাত্রা, বর্তমান গতি ইত্যাদি নিয়ে আরও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করবেন। বিশ্বের সমুদ্রসীমায় এর প্রভাব এখনো সামান্য। কিন্তু এই হিমবাহের ওপরের দিকে যত বরফ রয়েছে, তার সব যদি গলে যায়, তাহলে সমুদ্রসীমা ৬৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
এ রকম ভয়াবহ বিপর্যয় শত বছরে একবার আসতে পারে। কিন্তু গবেষক দল দেখতে পেয়েছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে এই হিমবাহে জমে থাকা বরফ গলার হার অনেক বেড়েছে। সম্ভবত আগামী এক দশকের কম সময়ের মধ্যে এই হিমবাহের সামনের অংশে নাটকীয় একটি পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত সব গবেষণায় সেই ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে, বলছেন হিমবাহ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক টেড স্ক্যামবোস। ইন্টারন্যাশনাল থোয়েইটস গ্লেসিয়ার কোলাবরেশন প্রকল্পে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
থোয়েইটস একটি অতিকায় হিমবাহ। এটির আকার কম-বেশি ব্রিটেন অথবা ফ্লোরিডার সমান। গত ৩০ বছর ধরে এটির গলে যাওয়ার গতি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কেন এটি ঘটছে, সেটিও শনাক্ত করতে পেরেছেন গবেষকরা। এর মূল কারণ হলো সমুদ্রের উষ্ণ পানি এর নিচে প্রবেশ করছে। পানিতে হিমবাহটির সামনের অংশকে গলিয়ে দিচ্ছে। উষ্ণ পানি এটির জমে থাকা বরফকে সংকুচিত আর দুর্বল করে তুলছে। যার ফলে হিমবাহটির গতি বাড়ছে এবং যেখানে হিমবাহ ভেসে থাকে, সেই এলাকা থেকে সরে যাচ্ছে। বর্তমানে হিমবাহের ৪০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের পূর্বের এলাকাটি প্রতি বছর ৬০০ মিটার করে এগিয়ে যাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটার্ন টেবিলে ঘুরানোর সময় পড়ে গেল নতুন ইঞ্জিন
পরবর্তী নিবন্ধযুক্তরাষ্ট্রে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ কর্মসূচি বন্ধ হয়নি