বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় : ওঁরাও-সাঁওতালী ছায়ায়

হাফিজ রশিদ খান | শুক্রবার , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১০:০২ পূর্বাহ্ণ

বাংলা ভাষায় আমার মনশ্চক্ষে প্রিয়কবিদের একটা যে-নিঃশব্দ, সৌম্য চলন দেখি, সেখানে একটু অন্যরকম আদলে উপস্থিত থাকেন বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯২০-১৯৮৫)। দশক বিভাজনের প্রচলিত রীতিতে বিগত বিশ শতকের চল্লিশের দশকের কবি তিনি। কিঞ্চিৎ ব্যতিক্রম বাদে কবিতায় পূর্ববর্তী তিরিশি অভিসন্দর্ভের পঞ্চপাণ্ডবের বিধ্বস্ত নৈঃসঙ্গ্য, অমঙ্গলবোধ, হতাশা-হলাহল, বিবমিষা-বিষাদ আর অভিযোজন-অনীহ মানসমণ্ডলের বাইরে চল্লিশের দশকটি জনমনের সার্বিক উজ্জ্বল উদ্ভাস ও অভীপ্সাকে অঙ্গীকার করার প্রয়াস চালিয়েছিল কবিতায়, শিল্পকলায়, রাজনৈতিক চিন্তায়। উপনিবেশকবলিত দেশ, মাটি ও মানুষের অস্তিত্ব সুরক্ষা, সুখদুঃখ-বেদনার অনুধাবন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার যে-প্রত্যয়গুলো আমাদের মজ্জাগত অতিসাধারণ বিষয়ের পরিণতি পেয়েছে এখন, সেসবের বেগবান উৎসমুখ খুলে দেওয়া এ দশকের কবিকুলের একটি প্রধানতম কীর্তি বলে প্রতীয়মান হয়। এই ধারাটির পাশেই হিন্দু ও মুসলমানি স্বতন্ত্রতার কাহন অর্থাৎ দ্বিজাতিতত্ত্ব, ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে আত্মপরিচয় উন্মুখ নিজস্ব আবাসভূমির চেতনাপ্রসূত কবিতার আরেকটি জোরালো স্রোতও প্রবহমান ছিল। ধর্মীয় চেতনা ও সূক্ষ্ম জাতীয়তাবোধ সম্বলিত এ ধারাটি পরবর্তীকালে আলাদা-আলাদাভাবে নিজেদের পাটাতন খুঁজে নেয়। অর্থাৎ পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পদার্পণ করে বাংলাভাষী আজকের বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সেই সময়ের পূর্ববঙ্গের কবিরা বাংলা কবিতার নতুন অবয়বটি পরিস্ফুট করে তুলতে সমর্থ হন। ড. শহীদ ইকবালের ভাষায় ‘বাংলাদেশের কবিতার ধারাটি বীজতলা পেয়েছে চল্লিশের দশকে’ (বাংলাদেশের সাহিত্যের ইতিহাস (১৯৪৭-২০১৫), পৃষ্ঠা : ১৯)।
আবুল হোসেন ফররুখ আহমদ আহসান হাবীব আবদুল কাদির সুফিয়া কামাল গোলাম মোস্তফা শাহাদাৎ হোসেন তালিম হোসেন আবদুর রশীদ ওয়াসেকপুরী বে-নজীর আহমদ আ ন ম বজলুর রশীদের নাম এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়। তাঁরা তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সন্তান এবং তখন কলকাতানিবাসী ছিলেন- শিক্ষাসূত্রে কিংবা কর্মব্যপদেশে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর স্বভূমি পূর্ববাংলায় প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আর বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পৈতৃক পরম্পরায় ঢাকার বিক্রমপুর অঞ্চলের সন্তান হলেও থিতু হন পশ্চিমবঙ্গেই। সাম্যবাদী রাজনীতিতে সমর্পিত কলম সৈনিক। মেহনতি মানুষের ঘাম ও রক্তঝরা শোষণের বিরুদ্ধে ন্যায্য মজুরি ও পূর্ণ মানবাধিকার প্রাপ্তির পক্ষের অহর্নিশ কর্মী ও দরদি লড়াকু ।
বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন আপাদমাথা ছোটোকাগজের কবি, বড়কাগজ বা বাজারী কাগজে বিন্দুমাত্র না-লিখেও ব্যাপক পাঠক-আদৃতি অর্জন করেন নিজস্ব ঋজু কাব্যস্বরের কল্যাণে। এক অর্থে চল্লিশের দশকের কবিরা একটি সম্মিলিত নাগরিক চেতনা বা বোধের উন্মোচনে ব্যাপক শক্তি ও মেধার বিনিয়োগ প্রদর্শন করেছেন, এমন বললে বাড়িয়ে বলা হয় না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) আবহে বেকার, ছিন্নমূল ও খাদ্যাভাব পীড়িত মানুষের হাহাকার, সম্প্রদায়িকতার সত্রাস পদচারণা, ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের দুর্বার স্পৃহা ও স্বপ্নগাথা- এসবে তাঁরা প্রলিপ্ত ও প্রদীপ্ত হয়েই কবিতার ভেতরে সংরাগ ও সজাগতা উৎকীর্ণ করেছেন শুদ্ধ প্রাণাবেগে। ফলে কবিতার উচ্চাঙ্গিক সঞ্চরণ ও নন্দনঋদ্ধিতে তাঁদের ঐকান্তিক সংসক্তি যথামাত্রায় সম্পাদন হয়নি বলে কোনো-কোনো সমালোচক উত্তরকালে অনুযোগ তুলেছেন। চল্লিশেরই আরেক কবি অরুণকুমার সরকার (১৯২১-১৯৮০) যেমন বলছেন : ‘চল্লিশের কবিরা যাঁদের শাগরেদি করেছিলেন বলে জানা যায় তাঁরা সবাই কিছু বড়ো কবি ছিলেন না কিন্তু এক হিসাবে নিঃসন্দেহেই তাঁরা বিশিষ্ট ছিলেন। দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য এবং প্রতিভার তারতম্য সত্ত্বেও তাঁরা ছিলেন একই মিছিলের পদযাত্রী, একই আন্দোলনের ধ্বনিবাহক, কাব্যের ভাষাকে আটপৌরে করে তোলার আন্দোলন, কাব্যের বিষয়বস্তুকে ব্যাপকতর করার আন্দোলন, সমকালীন বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে বাংলা কবিতার যোগসাধনের আন্দোলন। রবীন্দ্রনাথের কাছাকাছি থাকার দরুন তিরিশের কবিদের পক্ষে এমন একটি বিরাট আন্দোলনকে এককভাবে সার্থক করে তোলা সম্ভব ছিল না। কেননা কবিতা-রচনা তো শুধু ভাঙার খেলা নয়, একই সঙ্গে ভাঙাগড়ার খেলা। ভাঙার কাজের পিছনে উৎসাহ দেবার লোক থাকা চাই; গড়ার কাজেও অনেক হাত লাগে। চল্লিশের কবিরা এই ভাঙাগড়ার কাজে এগিয়ে গিয়েছিলেন, তিরিশের কবিদের গুণগ্রাহী পাঠক এবং দ্বিতীয়ত উত্তরসাধক হিসাবে’। (‘চল্লিশের চোখে চল্লিশের কবিতা’; তিরিশের কবিতা এবং পরবর্তী, পৃ. ১৩, নভেম্বর ১৯৮১)।
অরুণকুমার সরকার-এর এই নির্ব্যাজ, সত্যসন্ধ অবলোকনের কসুর না-করেই বলা যায়, চল্লিশের কবিকাফেলায় বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় অরুণকুমার সরকার-কথিত সেই বিশিষ্টতার তকমাধারী অবশ্যই। কবি বীরেন্দ্র-বিষয়ে আলোচনায় এখানে আরও একটি ক্ষুদ্র অনুষঙ্গের যৎসামান্য যোজনা দরকার।


চল্লিশের দশকের কলকাতায় বাংলা প্রগতি কবিতা আন্দোলন নামে একটি আন্দোলন সংঘটিত হয়। এ আন্দোলনের মৌল অভিপ্রায় ছিল : ‘এই যে সমাজ এ অবশ্যই নিছক স্ত্রীপুত্র-পরিবার, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধুগোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশী দিয়ে সীমিত বিষয়ী গৃহস্থের সংকীর্ণ সমাজ নয়। এ সমাজ বৃহত্তরকে নিয়ে, বিশেষ দেশকালে বিধৃত, দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ বিক্ষত, সংগ্রামে-ঐক্যে উদ্দীপ্ত বিশ্ব মানবসমাজের প্রতি বিচরণশীল সমানুভূতি ও সমমর্মিতায় আপ্লুত, ইতিহাস সচেতন এক দেশজ মৌল মানবসমাজ’- কবি মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়-এর এই ভাষ্যে যে-মর্ম উদ্বেলিত হতে দেখা যাচ্ছে তার সঙ্গে সংগ্রথিত হয়ে বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার আবেদনও সমতালে বিস্তারিত হয়েছে আন্তর্জাতিকতা থেকে একেবারে প্রত্যন্তের পাঁজর পর্যন্ত। উল্লেখ্য, এই আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্রে ছিলেন বিষ্ণু দে, অরুণ মিত্র, জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, বিমলচন্দ্র ঘোষ, দিনেশ দাশ, সমর সেন, কিরণশঙ্কর সেনগুপ্ত, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, মণীন্দ্র রায়, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং সুকান্ত ভট্টাচার্য। এঁদের সহযোগী ছিলেন তিরিশের কবি অমিয় চক্রবর্তী ও জীবনানন্দ দাশ।
এই আন্দোলনের দৃষ্টিতে দেশ হলো প্রধানত শ্রমিক-কৃষকের অর্থাৎ সমাজের মৌল অর্থনৈতিক উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত যে-বৃহত্তম জনসমষ্টি, তারা এবং তাদের বাসস্থান। মাটির কাছাকাছি জীবনযাপনে অভ্যস্ত জনমণ্ডলী। বলাবাহুল্য, এই চেতনার ভেতরদেশে রয়েছে মার্কসীয় জীবনবীক্ষার নিভৃত-নীরব উপস্থিতি।


বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্বকীয় সমাজ ও কাব্যবোধের মৌন-মুখর তাড়নায় নগর পরিকীর্ণ জ্বালা-যাতনা, স্বার্থলোলুপ সংশ্লিষ্টতার দৌড়ঝাঁপ, আপাত সুবেশী-সুভাষী প্রতারক পরিমণ্ডলের কজ্জল বেষ্টন থেকে নিজেকে আড়ালে নিয়ে গিয়েছিলেন একটা পর্যায়ে। কেননা কবিতা মূলতই সর্বৈব প্রাতিস্বিক প্রতিভার নিবিড় অনন্ত প্রজ্বলন ছাড়া অন্য কিছু নয়। ব্যক্তিকবির উজ্জ্বল নিঃসঙ্গতা আর তার অনুভবের দূরবর্তিতাকে নৈকট্যের সম্পদরূপে উদযাপনের স্বাতন্ত্রিক ক্ষমতা ছাড়া অন্য সবই কথার কথামাত্র। ভারতীয় প্রেক্ষাপটে সাম্যবাদী রাজনৈতিক আদর্শের নানামুখী বিদ্বিষ্ট কোলাহলের অঙ্গন থেকে বীতশ্রদ্ধ হয়ে নিভৃতির সৌন্দর্য ও কৌলিন্যে বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের চিত্তবিহঙ্গ ডানা মেলে দিয়েছিল আরও প্রান্তে, গভীরতর প্রান্তিকের জীবন-উঠোনে। এমনকি প্রগতি কবিতা আন্দোলনের খরস্রোত থেকেও নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে নিলেন কাছের অথচ অনালোচিত আদিবাসিতার কুহকী অরণ্য কুটিরের দিকে। তিনি দেখলেন, ভারতের স্বাধীনতার পরপরই ওই স্বাধীনতাকে মার্কসবাদী তথা সাম্যবাদে সমর্পিত তাত্ত্বিক সতীর্থেরা ‘ভুয়া’ স্বাধীনতা আখ্যা দিয়ে চরমপন্থা বা উগ্রপন্থার ব্রয়লারে নিজেদের সঁপে দিয়েছেন।
এভাবে রাজনীতির করাল অবস্থান ও শিল্পের সুষমার সঙ্গে সূক্ষ্ম বিরোধে চেতনার প্রকৃত ঐশ্বর্যটি না-হারিয়ে কবি জিরোতে গেলেন জীবনের উদাত্ত, নম্র অথচ রৌদ্রময় প্রশান্তির ছায়াতলে। এখানে তাঁকে পাই চির অবহেলিত আদিবাসী অঞ্চলের বেণুবনে, তাদের পরানকথার নন্দনে। নগর উচ্ছিষ্টের ভাগাড়ের বাইরে এখানে তিনি ক্রমে যে-ভুবনের চারণ হয়ে ওঠেন তা দলাদলি ও কপট গলাগলির পূতিগন্ধযুক্ত বাতাবরণ থেকে ভিন্ন- খোলা আকাশময়, কবিতা-আদিষ্টতায় সচ্চিদানন্দময়।
নিচে উদ্ধৃত কবিতাগুলোর চরণে-চরণে সেই অন্তর ঘরানার নূপুরধ্বনি যেন মন্দ্রস্বরে কেবলই ছলছল বেজে চলেছে :

ক. বাঁশবনের ঐ পাহাড়টিতে আগুন লেগেছে
মিতে গো! মেঘ করে গর্জন
শিকার পেয়ে শিকারীরা অমনি ক্ষেপেছে
সাথী গো! মেঘ করে গর্জন!

খ. ঐ দেখ রে, কোথা থেকে কাকটি এসেছে
ঝিকিমিকি সোনার মতো পালক ঝরিয়ে;
পুবের দেশের সোনা নিয়ে পালিয়ে এসেছে
ধরা পড়ার ভয়ে এলো পালক ঝরিয়ে!
(ওঁরাও নৃত্যসঙ্গীত অনুসরণে, পৃ. ১৫, শ্রেষ্ঠকবিতা, ১৯৭০)

ক. এই মাটির মাদল থেকে কী মিষ্টি গান
তুমি নিয়ে আসো গো!
বলো, কেউ কি এমন গান আনতে পারে
এই দেহের মাদল থেকে মাটির ভাঁড়ে
যে মধুর মতো, ওগো গাইয়ে আমার!

ওগো গাইয়ে আমার, নাও দু-হাত দিয়ে
নাও দু-হাতে জড়িয়ে নাও শরীর আমার;
আরো একটু … আরো!
ওগো, করো খেলা করো তুমি আমাকে নিয়ে
করো আমার শরীরে খেলা শরীর দিয়ে,
আরো, মাদলের মিঠে সুরে পাবে তুমি গান
মিঠে চিনির মতো!

খ. যদি বেসেছো ভালো
জাগো, সময় এলো!
দেখ, বিছানায় পড়ে আছে হীরার আলো,
দেখ, আমার চোখেও আলো ঝলমলালো!
তুমি কোরো না দেরি, মিঠে লগন এলো-
যদি বেসেছো ভালো।

ওগো, পাহাড় বেয়ে
তুমি উঠতে থাকো!
সেই উঁচুনিচু বাঁকাপথ দু-পায়ে মাখো
সেই পথের শেষেই আছে সুখের পাওয়া
এসো, তাড়াতাড়ি শুরু করো তোমার বাওয়া।

তুমি ক্লান্ত যখন নেমে আসবে শেষে
এসো, শুয়ে পড়ো ঝর্নার কিনার ঘেঁষে!
(পরধন্‌ গীতিকার অনুসরণে, পৃ. ১৭, শ্রেষ্ঠকবিতা, ওই)

ক. সাঁওতাল মেয়েদের গান।

পাহাড়িয়া মধুপুর, মেঠো ধূলিপথ
দিনশেষে বৈকালী মিষ্টি শপথ :

‘মোহনিয়া বন্ধু রে! আমি বালিকা
তোরই লাগি গান গাই, গাঁথি মালিকা।

‘আজো সন্ধ্যার শেষে খালি বিছানা;
আমি শোবো, পাশে মোর কেউ শোবে না-
তুই ছাড়া এই দেহ কেউ ছোঁবে না।’

সুরে সুরে হাওয়া তার মিষ্টি বুলায়;
সাঁওতাল মেয়ে-কটি দৃষ্টি ভুলায়।

দিন শেষ- ধুধু মাঠ- ধুধু মেঠোপথ;
সাঁওতাল মেয়ে-কটি ছড়ালো শপথ!

হাওয়ায় হাওয়ার মতো তাদের শপথ!
(তিন পাহাড়ের স্বপ্ন, পৃ. ১৯, শ্রেষ্ঠকবিতা, ওই)


ওঁরাও আর সাঁওতালী আটপৌরে জীবনের গন্ধমাখা এই কবিতাগুলো কবির সাম্যবোধ ও ইতিহাস চেতনার বিটপীর উদলা শেকড়কে আরও গভীরতর জীবনের মন্ময়তার দিকে চারিয়ে দেয়। ফলে বাংলা কবিতার গতানুগত, অভ্যস্ত গতরে একটুখানি নতুন অলংকার-উচ্ছ্বাস আর উষ্ণীষের উষ্ণতা ঝিলিক দিয়ে ওঠে। যে-বৃহত্তর জীবনের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির শপথে কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে জনমভর যুযুধান দেখি নগর বৈকুণ্ঠের বুদ্ধিবৃত্তিক মহল্লায়, সেখান থেকে তা কোলছাড়া হয়ে নব্যপাখার ক্রেঙ্কারে ওড়ে যায় দূরের সীমানায়। অতঃপর নতুন আনন্দ ও প্রবাহের ঝরনাধারা হয়ে তা নিরন্তর বয়ে চলে সম্প্রসারিত জীবনের হৃদ্য উপঢৌকনের মর্যাদায়। ভালোবাসাবাসির নবতর রঙালি উৎসব হয়ে।
এখানেই কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আমার মনের ঘরের গোপন একজনা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুয়িনগীতি
পরবর্তী নিবন্ধআজ কনীনিকা শবনম আসগরীর স্মরণানুষ্ঠান