বিয়ের প্রলোভনে অনেকের সাথে ব্ল্যাকমেইল

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২০ মে, ২০২২ at ৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক পোশাক কর্মীকে দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগে রিয়াজ জুবায়ের (২৮) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৭)। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি পেশায় একজন দর্জি। তবে শুধু এই নারী-ই নন, এর আগেও একই কায়দায় অনেক নারীর সাথে তাঁর অন্তরঙ্গ সম্পর্কের তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। তার কাজই ছিল বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্কের একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন। নারীর অজান্তেই স্পর্শকাতর মুহূর্তের ভিডিও ও ছবি তোলা হতো। পরে সেগুলো দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতো রিয়াজ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার। গত বুধবার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ আল মাদানী রোডের প্যাশন টেইলার্সে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলায়।
ভুক্তভোগী নারীর বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, রিয়াজ জুবায়েরের সাথে দোকানে পোশাক সেলাই করতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্ক হয় ওই নারীর। পরে রিয়াজ তাকে নানা জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যায়। দুই মাস আগে রিয়াজ তাকে তার বাসায় নিয়ে গিয়ে নগ্ন ছবি তোলার প্রস্তাব দেয়। ওই নারী এতে রাজি না হলে প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করবে বলে রিয়াজ হুমকি দেয়। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ওই নারী নিরবতা পালন করলে রিয়াজ তার মোবাইল দিয়ে ভিকটিমের অনেকগুলো নগ্ন ছবি তোলেন। তারপর ভিকটিমের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেন রিয়াজ। সে প্রস্তাবে রাজি না হলে, রিয়াজ মোবাইলে থাকা নগ্ন ছবিগুলো তার অফিসের বিভিন্ন কর্মচারীদের দেখায় এবং ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ২০ হাজার টাকা দিলে ছবি মুছে ফেলার প্রতিশ্রুতি দেয়। ভুক্তভোগী ওই নারী বিকাশের মাধ্যমে রিয়াজকে ২০ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু এরপরও ভুক্তভোগী নারীর নগ্ন ছবি মুছেনি রিয়াজ।
সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার আরো বলেন, গ্রেপ্তার রিয়াজ ওই নারীকে জন্মদিন পালনের কথা বলে শহরের একটি হোটেলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ভিকটিমকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। কিছুদিন ধরে ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় রিয়াজ। এক সময় ভিকটিম বাধ্য হয়ে রিয়াজের পরিবারের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। কিন্তু তাকে কোনো সাহায্য না করে গভীর রাতে অপমান করে ঘর থেকে বের করে দেয় রিয়াজের পরিবার। সেখানে কোনো সাহায্য না পেয়ে এসব অভিযোগ সে র‌্যাবকে জানালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্কের একপর্যায়ে রিয়াজ তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতেন। রিয়াজের মোবাইল পরীক্ষা করে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে তার সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
রিয়াজকে একজন ‘সাইবার প্রতারক’ উল্লেখ করে র‌্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার বলেন, রিয়াজ তার দোকানে আসা আরও কয়েকজন কিশোরী-তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে একইভাবে প্রতারণা করেছে। হোয়াটসঅ্যাপে ছবি ও ভিডিও আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে উঠতি বয়সের মেয়েদের জিম্মি করত। পরে তার প্রস্তাবে রাজি না হলে বিভিন্নজনের মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দিত। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবিতে ক্লাস চলাকালে খুলে পড়ল সিলিং ফ্যান
পরবর্তী নিবন্ধচন্দনাইশে মহাসড়ক অবরোধ বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ