বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে প্যাসিফিক জিন্সের সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট

x

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১১ আগস্ট, ২০২২ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপ তাদের কারখানার ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করে দৈনিক ৩২ মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। শুরুতে একটি ভবনের ছাদে প্যানেল স্থাপন করে ৩.৫ মেগাওয়াটের সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু করা হয়েছে। এই প্যানেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে কারখানাটির চাহিদার ১০ শতাংশ যোগান দেয়া সম্ভব হবে। এতে কারখানাটির প্রতিমাসে সাশ্রয় হবে অন্তত ১০ লাখ টাকা।
গত সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম ইপিজেডের প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের কারখানার ছাদে এই সোলার প্ল্যান্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান। প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের ‘গ্রিন এনার্জি ইনিশিয়েটিভের’ অংশ হিসেবে ইউনিভার্সাল জিন্স লিমিটেড কারখানায় নির্মিত এই সোলার প্ল্যান্টে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ করতে হয়েছে। কারখানাটির ৪৯ হাজার ৯৪ স্কয়ার ফিট আয়তনের সোলার প্ল্যান্টে ওয়াকওয়ে রয়েছে ১২ হাজার ৪৫০ স্কয়ার ফিট। এই প্ল্যান্টটি বছরে ৭০০ টন কার্বন ডাই-অঙাইড নির্গমন হ্রাস করবে বলেও প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভির জানান।
তিনি বলেন, একটি পাইলট প্রজেক্টের সফলতার পর আমরা আমাদের এই কারখানাটিকে সোলার প্ল্যান্টের আওতায় নিয়ে আসি। এতে দৈনিক সাড়ে ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। যা আমাদের এই কারখানার ১০ শতাংশ বিদ্যুতের চাহিদা মেটাবে। তিনি আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের ১০টি প্রতিষ্ঠানের ছাদে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে গত ১ এপ্রিল ইউনিভার্সাল জিন্স লিমিটেডে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু হয়। যেটি ৮ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এই বিদ্যুৎ প্ল্যান্টে ইতোমধ্যে প্রায় ২শ’ মেগাওয়াটের কাছাকাছি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে বলেও সৈয়দ মোহাম্মদ তানভির জানান।
আগামী সেপ্টেম্বরে প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডের কারখানায় সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু হতে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৮০ হাজার স্কয়ার ফিট আয়তন জুড়ে স্থাপন করা এই প্ল্যান্টে দৈনিক ৫.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। সেটি ওই কারখানার ১৫ শতাংশ বিদ্যুতের চাহিদা মেটাবে।
ক্রমান্বয়ে গ্রুপের অন্যান্য কারখানাগুলোকেও সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের আওতায় নিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে সৈয়দ তানভির জানান, ২০২৩ সালে জিন্স ২০০০ লিমিটেড এবং এনএইচটি ফ্যাশনস লিমিটেডে, ২০২৪ সালে প্যাসিফিক নিটেঙ লিমিটেড এবং প্যাসিফিক ওয়ার্কওয়্যারস লিমিটেডে আর ২০২৫ সালে প্যাসিফিক ক্যাসুয়ালস লিমিটেড (ইউনিট ১ ও ২), পাসিফিক এটায়ার্স লিমিটেড, প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেড (ইউনিট ২) এবং ইউনিভার্সাল জিন্স লিমিটেডে (ইউনিট ৪) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের এ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে।
সৈয়দ মোহাম্মদ তানভির জানান, ১০টি কারখানায় ৪ লাখ ৪১ হাজার ৬৫০ স্কয়ার ফুট জায়গাজুড়ে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু হলে ৩২.৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে, যা প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম হবে। বছরে কার্বন ডাই-অঙাইড নির্গমন হ্রাস করবে ৬ হাজার ৪৫৮ মেট্রিক টন।
সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, ‘বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ইপিজেডের কারখানাগুলোতে ৫ থেকে ১০ শতাংশ সোলার প্ল্যান্ট চালুর বিষয়টিকে প্রাধান্য দিচ্ছে। প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপ সোলার প্ল্যান্টের মাধ্যমে তাদের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ ভাগ পূরণ করতে যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অত্যন্ত ইতিবাচক। তিনি অন্যান্য বিনিয়োগকারীদেরকেও একইভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
পাওয়ার প্ল্যান্ট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মশিউদ্দিন বিন মেজবাহ, প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভির উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচন্দনাইশ ও বাঁশখালীতে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কা, চালক নিহত