বিদেশগামী কর্মীরা যেন প্রতারিত না হয়, ব্যবস্থা নিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

৩ বছরে মন্ত্রিসভার ৯০ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন

| মঙ্গলবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৮:০১ পূর্বাহ্ণ

কাজ নিয়ে বিদেশে যেতে আগ্রহীরা যাতে প্রতারণার শিকার না হন, সে বিষয়ে ব্যাপক প্রচারের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ধার-দেনা বা সম্পত্তি বিক্রি না করে, প্রয়োজনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে যেতে উৎসাহিত করার কথাও বলেছেন তিনি। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারপ্রধান প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এই নির্দেশনা দেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন। খবর বাসস ও বিডিনিউজের। এদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশকৃত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত গত তিন বছরে মন্ত্রিসভার প্রায় ৯০ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে এবং অবশিষ্ট সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে মন্ত্রিসভায় মোট ৬৮৯টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬১৫টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে এবং আরো ৭৪টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকের পর সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল
ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, গত তিন বছরে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নের হার ৮৯.২৬ শতাংশ।
বিদেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সেখানে যে বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে, সেটি হল কোনোভাবে যাতে শ্রমিকরা যারা বিদেশে যাবেন, উনারা নিজেরাও যেন আমাদের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় বা অধিপ্তরের সাথে যোগাযোগ রাখেন এবং তারা অতিরিক্ত অর্থ প্রদান যাতে না করেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে এই জিনিসটি ব্যাপকভাবে প্রচারে আনা হয়। মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হবে। আর সরকারের যে চ্যানেল আছে, তার মাধ্যমে করবেই। জেলা-উপজেলায় দপ্তর আছে। স্থানীয় সরকারের সংস্থাগুলো আছে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সব তথ্য এক জায়গায় আনার নির্দেশনাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকে না জেনে সরাসরি টাকা দিয়ে যে প্রতারণার শিকার হয়, সে কথা তুলে ধরে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সেজন্য একটা সাজেশন এসেছে, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে তারা যাতে যায়। জমিজমা বিক্রি করে না গিয়ে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে গেলে সুবিধাটা হবে; ব্যাংক কিন্তু তার অ্যাপয়েন্টমেন্ট কনফার্ম না করা পর্যন্ত পেমেন্ট করবে না। সেক্ষেত্রে সেও কিন্তু একটা নিরাপদ অবস্থায় থাকবে। মালয়েশিয়ায় গিয়ে নিঃস্ব হয়ে ফেরার কয়েকটি ঘটনা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে সচিব বলেন, মালয়েশিয়ায় গেছে তিন-চার লাখ টাকা করে খরচ করে, জমি বিক্রি করে দুর্ভাগ্যজনকভাবে চার লাখ টাকা তুলতে পারেনি দুই বছরে। নিঃস্ব হিসেবে ফেরত আসতে হয়েছে। সেজন্য এগুলো বিশেষভাবে প্রধানমন্ত্রী ভালোভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছেন, বিদেশে যে লোকজন যাবে, এটা ভেরি প্রিসাইস এবং ট্রান্সপারেন্ট ওয়েতে করার জন্য, মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করে দিতে।
বিদেশগামীদের উদ্দেশে আনোয়ারুল বলেন, আপনাদের যদি টাকা-পয়সার দরকার হয়, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে যান। ব্যাংক যখন আপনাকে ঋণ দেবে, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ছাড়া ঋণ দেবে না। তখন সেও সেইফ থাকবে।
সচিব জানান, দেশে কর্মসংস্থান নিশ্চিতের ব্যবস্থা করার কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। দেশে বেজার ১০০টি শিল্পপার্ক হচ্ছে, সেখানে লাখ লাখ লোকের প্রয়োজন হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাল থেকে শতভাগ যাত্রী নিয়ে চলবে ট্রেন
পরবর্তী নিবন্ধইউক্রেন সংঘাত কেমন ভূমিকা রাখবে তুরস্কের ড্রোন