বিজ্ঞান চর্চায় চট্টগ্রাম

ড. উজ্জ্বল কুমার দেব | মঙ্গলবার , ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১১:১২ পূর্বাহ্ণ


বিজ্ঞান চর্চা সাধারণত শিক্ষার্থীদের মনে বৈজ্ঞানিক মন-মানসিকতা গড়ে তোলে । বর্তমানে বিজ্ঞান চর্চা ও এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে পুরো বিশ্ব অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমাদের দেশও এক্ষেত্রে অনেক এগিয়েছে, কিন্তু আরও এগিয়ে যেতে হবে। আমরাজানি শিল্প-বিপ্লবের পর আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ। শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ সমূহ মোকাবেলায় বিজ্ঞানীরা প্রস্তুত। বিজ্ঞানের নতুন নতুন উদ্ভাবনীর ফলে বলতে গেলে পুরো পৃথিবীই এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। সারাবিশ্ব চলে এসেছে হাতের মুঠোয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে এবছর এবং ইতিমধ্যে মাধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয় যা গৌরবের। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে উন্নীতকরণ। এ লক্ষ্যে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বর্তমান সরকার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে, এটা আমরা সবাই জানি। এই লক্ষমাত্রা অর্জনের অনেক সুচকের মধ্যে অন্যতম হলো দেশীয় জনসম্পদকে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করে তোলা। এক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাত একটি সম্ভাবনাময় এবং গুরুত্বপূর্ণখাত হিসাবে বিবেচিত। প্রযুক্তিখাতে অগ্রগতির জন্য প্রকৌশল শিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞানের গুরুত্বও অপরিসীম। স্বাধীনতা পরবর্তী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা কতটুকু এগিয়েছি তা অত্যন্ত বিবেচ্য বিষয়। কারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিখাতে অগ্রযাত্রাই পারে একটি উন্নত জাতি তৈরি করতে। এ লেখায় আমি চট্টগ্রামে বিজ্ঞান চর্চা ও তার প্রেক্ষাপট নিয়ে মূলত আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে তৎপরবর্তী সময়টার দিয়ে নজর দিব।
বিজ্ঞানের চর্চার ক্ষেত্রে একাডেমিক অবদানের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক, সাংগঠনিক ও ব্যক্তি কেন্দ্রিক লেখালেখির ভূমিকা প্রনিধানযোগ্য। এ অঞ্চলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ছাড়াও সরকারি, বেসরকারী পর্যায়ে আরো বেশ কয়েকটি মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ আছে যেখানে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিষয়াদির শিক্ষাক্রম পরিচালিত হয়, যাতে বিজ্ঞান শিক্ষার পাশাপাশি, এর ব্যবহার ও প্রয়োগ অপরিহার্য। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই মূলত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বর্তমান চুয়েট (তৎকালীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং পরবর্তীতে বিআইটি চট্টগ্রাম) এ অঞ্চলে বিজ্ঞান গবেষণাই নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। প্রাইভেটে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ইউএসটিসি) এর নবসূচনা ১৯৮৯ সাল থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন মাত্রা যুক্ত করে। তৎপরবর্তীতে মধ্য নব্বইয়ের দশকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি. ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় যা এ অঞ্চলে গবেষণায় ভিন্নমাত্রা যোগ করে। বর্তমানে এগারটি সরকারী ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে বিজ্ঞান গবেষণা ও চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের পরপরই আসে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অবদান। বিজ্ঞানের একাডেমিক গবেষণা ও চর্চায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র এবং বিজ্ঞানের বিভাগগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। বিজ্ঞানকে ভালোবেসে এরকম একদল উঠতি শিক্ষার্থীদের সামনে একজন অনুসরণ যোগ্য ব্যক্তিত্ব থাকতে হয় যাকে অনুসরণ ও অনুকরণ করা যায়, যার থেকে জীবন সম্পর্কে শিক্ষা নেওয়া যায়। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলাম এমনতর একজন বড় বিজ্ঞানী ছিলেন যা চট্টগ্রামবাসীর পরম পাওয়া। স্যার শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিই ছিলেন না একটি প্রতিষ্ঠান ছিলেন। উনার স্থাপিত গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র গণিত ও বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশের পরিধি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের গবেষণা-সুনাম বজায় রেখে, পরিচিতি ও সহযোগিতা বিস্তৃত করছে। নব্বইয়ের দশকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিজ্ঞানে গবেষণার বেহাল দশা আর স্কুল পর্যায়ে বিজ্ঞানের চেয়ে বাণিজ্য শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দেখে মনে ব্যথা পেয়েছিলেন। স্যার হয়ত অনুধাবন করেছিলেন গোড়ায় হাত দিতে হবে। তিনি বলতেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগাতে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব বাড়াতে হবে।
আমার স্পষ্টই মনে আছে, নব্বইয়ের দশকে স্যার ‘বিজ্ঞান খেলাঘর’ নামক একটি সংগঠনের মাধ্যমে বিজ্ঞানকে স্কুল কলেজ পর্যায়ে জনপ্রিয় করার কাজে লাগেন। উনার সহযোগী আরও অনেক মানুষ ছিলেন, তাঁদের মধ্যে সরোজ হাজারী স্যার, সাংবাদিক সংগঠক মোহাম্মদ ইউসুফ ভাই, খেলাঘরের চন্দন ধর সহ অনেকে। তখনকার দিনে ছোটদের মাঝে জনপ্রিয় বিজ্ঞানলেখক বুয়েটের ড. আলী আসগর স্যারকে নিয়ে আসতেন চট্টগ্রামে, যিনি বিজ্ঞান গবেষণা, সর্বজনীন বিজ্ঞান শিক্ষা এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের উপর বিশটি বই লিখেছেন। চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল স্কুলে বসতো বিজ্ঞান খেলাঘরের উন্মুক্ত লেকচার গুলো। লেকচার দিতেন দেশবরেণ্য বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানের শিক্ষকরা। এ ধরণের আয়োজনের সাহায্যে জনসচেতনতা বাড়িয়ে, পাঠচক্র চালিয়ে শিশু ও কিশোরকে পাঠ্য-সিলেবাসের বাইরে থেকে গণিত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আকর্ষণ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মযজ্ঞ পালন করেছিলেন তৎকালীন সময়ে বিজ্ঞান খেলাঘর নামক সংগঠনটি। বর্তমানে যে গণিত ও বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডগুলো হয়, তা তখন থেকেই ধীরে ধীরে অংকুরোদগম হতে থাকে। বিজ্ঞান উৎসব, বিজ্ঞান জয়োৎসব নামেও অনেক দৈনিক পত্রিকা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় বিভিন্ন আয়োজন করে থাকেন বর্তমানে। সরকারী ভাবেও প্রতিবছর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমেলা, ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা হয়ে থাকে। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞানের এ ধরণের উৎসবে বিচারক হিসাবে ও অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল অনেকবার। স্কুল কলেজের ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা বর্তমান সমস্যা সমাধানের অনেক প্রজেক্ট উপস্থাপন করতো যা তাক লাগানোর মতো। এসব কিছুরই উদ্দেশ্য একটাই। শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান নিয়ে ভাববে, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সমস্যা নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করবে। সেসব গবেষণা বিভিন্ন উদ্ভাবনী কাজে লাগাবে। আর সেই উদ্ভাবন ও উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে চট্টগ্রাম তথা দেশকে।
বর্তমানে চট্টগ্রামে বিজ্ঞান চর্চার সম্প্রসারণে বিজ্ঞান খেলাঘরের পাশাপাশি অন্যান্য বিজ্ঞানকেন্দ্রিক সংগঠন, ফোরাম, ক্লাব বা সার্কেল ও বিভিন্নভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে নীরবে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য চট্টগ্রাম বিজ্ঞান পরিষদ। চট্টগ্রামের সবচেয়ে প্রাচীন এ ক্লাবের সাথে বিজ্ঞানপ্রেমিক সকল মানুষ কমবেশী যুক্ত ছিলেন । নগরীর নবাব সিরাজদৌল্লাহ রোডে এক্লাবের স্থায়ী কার্যালয়, যা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ অঞ্চলে বিজ্ঞান চর্চার সম্প্রসারণে ভূমিকা রেখে চলেছে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি নামক একটি সংগঠন আছে যারা প্রতিবছর স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড আয়োজন করে। এটার চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যক্রমের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখার কারণে বুঝতে পারি শিশু কিশোরদের বিজ্ঞানমনস্কতা সৃষ্টিতে এসব সংঘটনের ও অবদান অনস্বীকার্য। সারাদেশ থেকে যাচাই-বাছাই করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যায় প্রতিযোগীদের। একইভাবে গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির কথা ও বলা যায়। একটু পিছনে গেলে দেখাযায়, এ কমিটি ২০০১ সালে গঠিত হয়ে প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজনের চেয়েও যে কাজটি অলক্ষ্যে করে যাচ্ছে তা হলো ছোট থেকেই শিশু-কিশোরদের মধ্যে গণিত ভীতি দূর করা। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো গণিত অলিম্পিয়াড কোন প্রতিযোগিতা নয়, বর্তমানে এটি গণিত উৎসব নামে অবহিত। আঞ্চলিক পর্যায়ে বেশ কয়েক বছর ধরে, বেশ কয়েকটি উৎসবে উপস্থিত থেকে ছোট ছোট শিশু-কিশোরদের গভীর মনোযোগের সহিত আনমনা হয়ে গণিতের সমাধান করতে দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হই। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পর্যায় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ধনঞ্জয় বিশ্বাস ও বৃষ্টি শিকদার-রা তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়। সবচেয়ে সুখের খবর ২০১৮-এ রোমানিয়ার ক্লুজ-নাপোকা শহরে ৫৯তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম গোল্ড মেডেল অর্জন করে চট্টগ্রামেরই ছেলে আহমেদ জাওয়াদ চৌধুরী । অতিসম্প্রতি চুয়েটের তিনজন ছাত্র আমেরিকান কনক্রিট ইউনিষ্টিউট এর সারাবিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় প্রথম তিনটি স্থানই দখল করে নেয়। এরকম আরও উদাহরণ দেওয়া যায়।
বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণায় চট্টগ্রামের কিছুকীর্তি সারাবিশ্বে প্রশংসা অর্জন করেছে। শুধু বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলাম-ই না, চট্টগ্রামে বিজ্ঞান চর্চা করে বড় হওয়া বিজ্ঞানী শুভ রায় বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম কিডনি তৈরি করেছেন। বাংলাদেশে প্রতিবছর এক কোটি আশি লক্ষ লোক কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়, যাদের প্রায় ৪০ হাজার রোগীর কিডনি সম্পূর্ণরূপে বিকল হয়। এসব রোগীর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার রোগীই মারা যায়। কিডনি বিকল রোগীদের কিডনি সংযোজন ও ডায়ালাইসিস দুটোই অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আবার ডায়ালাইসিস আসল কিডনির মাত্র ১৩ ভাগ কাজ করে। জটিল কিডনি রোগের তাই কিডনি প্রতিস্থাপনই সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা। তবে কিডনি সংযোজনের বড় সমস্যা দাতার অভাব। সুতরাং কৃত্রিম কিডনি আবিস্কার চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক অসামান্য কীর্তি। ব্যাঙের নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন প্রাণীবিজ্ঞানী সাজিদ আলী হাওলাদার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে এ প্রজাতি আবিষ্কার করা হয়। সৌরশক্তি গবেষণায় বিজ্ঞানী নওশাদ আমিনের সাফল্য ঈর্ষণীয়। আদনান মান্নান ডায়াবেটিক নিয়ে মৌলিক গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। এরকম আরও অনেক অজানা কীর্তি রয়েছে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা চট্টগ্রামের বিজ্ঞানীদের। আশাকরি অদূর ভবিষ্যতে চট্টগ্রামে বিজ্ঞানকে ভালবেসে একটি মেধাবী প্রজন্ম গড়ে উঠবে যারা দেশকে নেতৃত্ব দেবে। সারাদেশে আমরা পাবো হাজারো জামাল নজরুল ইসলাম যারা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। আমরা জাতি হিসেবে হবো গর্বিত। আজাদীর ৬১ বছর পূর্তিতে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

লেখক : প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান, গণিত বিভাগ, চট্টগ্রাম
প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে চট্টগ্রাম
পরবর্তী নিবন্ধজাতীয় অধ্যাপক ডা. ইব্রাহিম স্মরণে ডায়াবেটিস সেবা দিবস উদযাপন