বিএনপির সঙ্গে আলোচনার দ্বার খোলা : আমু

‘প্রয়োজনে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি আসুক’

| বুধবার , ৭ জুন, ২০২৩ at ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ

গণতন্ত্র অব্যাহত রাখার স্বার্থে’ বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে আওয়ামী লীগের আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু।

বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কথা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার বার নাকচ করে আসার মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক সমাবেশে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের এমন বক্তব্য এল। খবর বিডিনিউজের।

১৪ দলের সমন্বয়ক আমু দাবি করছেন, শেখ হাসিনাই বলেছেন যে আলোচনার দ্বার খোলা। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ১৪ দলের সমাবেশে বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, সংবিধানের ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হচ্ছে, যে কোনো সমাধান, যে কোনো কিছু করতে আমরা প্রস্তুত। আসুন, গণতন্ত্রকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে আমরা আপনাদের সঙ্গে বসতে রাজি আছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দ্বার খোলা। তিনি বলেছেন, যে কোনোভাবে তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে তিনি প্রস্তুত।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এখন আন্দোলনে রয়েছে বিএনপি; তবে আওয়ামী লীগ সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কূটনীতিকদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার মধ্যে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে প্রতিনিধি পাঠানোর আহ্বানও জানান আমু। তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, বিগত সময়ে জাতিসংঘ যেভাবে তারানকো সাহেবকে পাঠিয়েছিলেন। আামাদের দুই দলকে নিয়ে এক সঙ্গে বসে মিটিং করেছিলেন। আজকেও প্রয়োজনে এই ধরনের দলাদলি না করে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি আসুক। আমরা বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে আলোচনা করে দেখতে চাই। কোথায় ফারাক? সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনে বাধা কোথায়? কীভাবে সেটা নিরসন করা যায়। এটা আলোচনার মধ্য দিয়েই সুরাহা হতে পারে। অন্য কোনো পথে নয়।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে দুই পক্ষের মধ্যস্থতা করতে এসেছিলেন জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। তিনি দুই পক্ষকে নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা করলেও বরফ গলেনি। সেবার দশম সংসদ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করে। তারপর একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে।

আমু বলেন, আপনারা ২০১৩ সালে প্রথম যখন জিগির তুললেন নির্বাচনের, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে তারানকো সাহেবকে পাঠান হল। তিনি আসলেন আলাদা আলাদা বৈঠক করলেন। বিএনপি ও আমাদের সাথে দুই দলকে নিয়ে যৌথ মিটিং করলেন। প্রমাণিত হল, তাদের (বিএনপির) কথা কতটা অযৌক্তিক। আমরা কতটা যৌক্তিক ছিলাম। আমরা বিএনপিকে বললাম, আসুন, সংবিধানের প্রয়োজনে আমাদেরকে নির্বাচন করতে হবে। আপনারা যদি আজকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, প্রয়োজনে আমরা এক বছর পরে আরও আর একটি নির্বাচন করব। তারা কথা দিয়ে কথা রাখলেন না।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বছরে এসে আগের সেই বিষয় নিয়েই বিরোধপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল। নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হলে ভোট করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি রয়েছে বিএনপির। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপি না এলেও ভোট হবে।

আন্দোলনরত বিএনপিকে সতর্ক করে সংসদ সদস্য আমু বলেন, নির্বাচন বানচাল করে যারা অসংবিধানিক একটা অবস্থার সৃষ্টি করতে চান, অসংবিধানিক কোনো কিছু আনতে চান, তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। যেভাবে ১৪ দল সমস্ত ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করেছিল, আগামী দিনেও দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগণ্ডগোল করতেই বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বিএনপির কর্মসূচি : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধএভাবে কেউ মারা যাইতে পারে!