বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ‘ইলমে হাদীস ও ইসলামী ফিকহে ইমাম আবু হানিফা (রাহ.) ও ইমাম বুখারী (রাহ.) এর অবদান’ শীর্ষক সেমিনার গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হয়। আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মুহাম্মদ মুহিউদ্দিন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন চ বি প্রফেসর ড. আ.ক.ম আবদুল কাদের, ড. অধ্যক্ষ সৈয়দ আবু নোমান, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহ মুঈন। এতে বক্তারা বলেন, ইমাম আবু হানিফা (রাহ.) এর ব্যক্তিত্ব, কৃতিত্ব এবং শ্রেষ্ঠত্ব তাঁর সমকালীন যুগ থেকে নিয়ে এ যাবৎ সর্বমহলে স্বীকৃত। মুসলিম উম্মাহর বড় বড় মনীষীগণ কুরআন-হাদীসের আলোকে ইসলামী শরীয়ার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে তাঁর অসাধারণ কৃতিত্ব ও অবদানের কথা অকপটে স্বীকার করে গেছেন। কুরআন হাদিস গবেষণা তথা ইজতিহাদের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁকে প্রসিদ্ধ চার ইমামের মাঝে তাকেই শ্রেষ্ঠ ইমাম হিসেবে অভিহিত করা হয়। বর্তমানে ইরাক, মধ্য এশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মুসলমান নিজেদের জীবনচলার পথে উদ্ভুত সমস্যার সমাধানে ইসলামের দিকনির্দেশনা হিসেবে তাঁর মাজহাবকে মেনে চলেন। প্রমাণিত সেটাই আমার মাযহাব।
বক্তারা বলেন, ইসলামের ইতিহাসে যে ক’জন বিরল মনীষী রাসুল (সা.) এর সুন্নাহ সমুন্নত রাখা ও তা মানব জাতির নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন, তাঁদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হলেন ইমাম বুখারী (রাহ.)। তাঁর লিখিত হাদীস গ্রন্থ সহীহ আল বুখারী আল কুরআনের পরেই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। প্রত্যেকটি হাদীসের বর্ণনাকারীদের ক্রমধারা বিশুদ্ধ এবং নির্ভরযোগ্য হিসেবে নিশ্চিত হওয়ার পরই কেবল তিনি হাদীসটি তাঁর সংকলনে অন্তর্ভুক্ত করতেন। ইমাম আল-বুখারীর হাদীস সংকলন এক অবিস্মরণীয় অর্জন এবং হাদীস বিজ্ঞানে এক অতুলনীয় সংযোজন। তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে হাদীস গবেষণা বৈজ্ঞানিক রূপ লাভ করে যেখানে কোন প্রকার পরিবর্তন বা বিকৃতি ঠেকানোর জন্য নিয়মকানুন প্রয়োগের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বুখারী শরীফকে এমনভাবে সাজিয়েছেন যেন তা ইসলামী আইন বা ফিক্হ বুঝতে সাহায্য করে। সহীহ আল-বুখারীকে ৯৭টি বইয়ে বিভক্ত করা হয়েছে, যার প্রত্যেকটিতে অসংখ্য অধ্যায় রয়েছে। আইনের একেকটি ইস্যুর ভিত্তিতে একেকটি অধ্যায়ের নামকরণ করা হয়েছে এবং সেই অধ্যায়ে সেসব হাদীস অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যেগুলোকে বিশুদ্ধ বিবেচনা করা হয় ও যেগুলোতে সেই আইনকে সমর্থন করার প্রমাণ রয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।