বার্ট্রান্ড রাসেল: অহিংসাবাদী সমাজ সমালোচক

| বুধবার , ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

বার্ট্রান্ড আর্থার উইলিয়াম রাসেল, ৩য় আর্ল রাসেল, ও এম, এফ আর এস। তিনি একাধারে দার্শনিক, যুক্তিবিদ, গণিতবিদ, ইতিহাসবেত্তা, সমাজকর্মী, অহিংসাবাদী, এবং সমাজ সমালোচক। তিনি ১৮৭২ সালের ১৮ মে যুক্তরাজ্যের মনমাউথশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই রাসেল অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। গণিতশাস্ত্রের প্রতি ছিলো প্রবল আগ্রহ। সেই বালক বয়সেই তিনি ইউক্লিডের জ্যামিতি পড়তে শুরু করেন। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখানেই তার মেধার পূর্ণ বিকাশ ঘটতে থাকে । শিক্ষাজীবন শেষ করে রাসেল ট্রিনিটি কলেজে অধ্যাপনা পেশায় নিযুক্ত হন। এই সময় থেকেই তিনি গবেষণামূলক গ্রন্থ রচনা শুরু করেন। ১৯১৮ সাল তার একটি লেখা নিয়ে শুরু হয় প্রচণ্ড বিতর্ক। বিতর্ক শেষ পর্যন্ত তার জন্য কিছুটা ভোগান্তি ডেকে আনে। ছ’মাসের কারাদণ্ড হয় তার। বার্ট্রান্ড রাসেল ছিলেন বিংশ শতাব্দীর সর্বাপেক্ষা আলোচিত একজন মানবদরদী দার্শনিক। তিনি ছিলেন যুদ্ধ বিগ্রহ, অশান্তি, অন্যায়, অত্যাচার ও ধর্মান্ধতার ঘোরতর বিরোধী। তিনি একদিকে যেমন চাইতেন সর্বপ্রকার শাসন শোষণ উৎপীড়ন নির্যাতন মুক্ত মানুষের জীবন, তেমনি তিনি ছিলেন প্রথাগত নৈতিকতারও বিরোধী। তিনি ছিলেন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী। রাসেল তার অহিংস মতবাদ প্রচারের জন্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জেলবন্দী হন, তিনি হিটলারের বিরূদ্ধে প্রচারণা চালান, সোভিয়েত টোটালিটারিয়ানিজম এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণের সমালোচনা করেন এবং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে ছিলেন সর্বদা সোচ্চার। রাসেল এবং হোয়াইটহেড একত্রে প্রিনিকপিয়া ম্যাথমেটিকা নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন, যাতে তারা গণিতকে যুক্তির ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন। তার দার্শনিক নিবন্ধ ‘অন ডিনোটিং’ দর্শনশাস্ত্রে মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়। দুটো গ্রন্থই যুক্তি, গণিত, সেট তত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব এবং দর্শনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। রাসেল ১৯৫০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন, যা ছিল ‘তার বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ রচনার স্বীকৃতিস্বরূপ যেখানে তিনি মানবতার আদর্শ ও চিন্তার মুক্তিকে ওপরে তুলে ধরেছেন’। বার্ট্রান্ড রাসেলের বই সমূহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়। ১৯৭০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধতথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার নয়, সৃষ্টিশীল কাজে ব্যবহার করুন