বাজার চড়া, খাদ্য অধিদপ্তরে ধান বিক্রিতে অনাগ্রহী কৃষক

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ

সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে দাম বেশি, তাই চলতি আমন মৌসুমে খাদ্য অধিদপ্তরের কাছে ধান বিক্রি করতে অনাগ্রহী চট্টগ্রামের কৃষকরা। এতে এবার অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে (২০২২২৩) সারা দেশ থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন ধান ও পাঁচ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ৯ হাজার ২৩৫ মেট্রিক টন ধান এবং ৮০৬ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের বরাদ্দ দেয়া হয় খাদ্য অধিদপ্তরকে। গত ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ ধানচাল সংগ্রহ। এদিকে ৮ ডিসেম্বর খাদ্য অধিদপ্তদরের এক পরিপত্রে বলা হয়, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৭০ শতাংশ, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ৯০ শতাংশ এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ধানচাল সংগ্রহ শতভাগ সম্পন্ন করার জন্য জেলা, উপজেলা ও গুদামভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরি ও সে অনুসারে সংগ্রহ সম্পন্ন করতে হবে। অথচ ডিসেম্বর মাস প্রায় শেষ হতে চললেও গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে কোনো ধান ও চাল সংগ্রহ করা হয়নি। মূলত মাঠ পর্যায়ে কৃষকরাই ধান সরবরাহ করছেন না। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে বেশি দাম পাচ্ছেন কৃষক। সরকার প্রতি কেজি আমন সিদ্ধ চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করে ৪২ টাকা। অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। একইভাবে সরকার প্রতি কেজি আমন ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করে ২৮ টাকা। আর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক

মো. আব্দুল কাদের দৈনিক আজাদীকে বলেন, চাল সংগ্রহের চুক্তি হয়েছে। এখনো সংগ্রহ শুরু হয়নি। ধানের বিষয়েও মিটিং হয়েছে। এখনো সংগ্রহ হয়নি।

কৃষকদের আগ্রহ না থাকার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাইরে দাম বেশি হওয়ায় তারা আমাদের সরবরাহ করতে আগ্রহী হচ্ছে না। বাইরে যদি কম দাম হত তাহলে আমাদের কাছে আসত। বাজারমূল্য চড়া, এটা কিন্তু কৃষকের জন্য উপকারি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য কৃষকদের ন্যায্য মূল্য পেতে সহযোগিতা করা। বাজার চড়া হওয়ায় সেই উদ্দেশ্য কিন্তু পূরণ হচ্ছে।

সিদ্ধ চাল : চট্টগ্রাম থেকে এবার সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০৬ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সীতাকুণ্ড উপজেলা থেকে ২৬৬ মেট্রিক টন, ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে ৪১৬ মেট্রিক টন এবং পটিয়া উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা হবে ১২৪ মেট্রিক টন।

আমন ধান : চট্টগ্রাম থেকে ৯ হাজার ২৩৫ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করার বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে সন্দ্বীপ উপজেলা থেকে এক হাজার ২১২ মেট্রিক টন, মীরসরাই উপজেলা থেকে এক হাজার ১৮ টন, সীতকুণ্ড উপজেলা থেকে ৩১১ মেট্রিক টন, ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে এক হাজার ১০২ মেট্রিক টন, হাটহাজারী উপজেলা থেকে ৪৬৩ মেট্রিক টন, রাউজান উপজেলা থেকে ৬১৯ মেট্রিক টন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা থেকে ৭৯৫ মেট্রিক টন, বোয়ালখালী উপজেলা থেকে ২৪৫ মেট্রিক টন, পটিয়া উপজেলা থেকে ৫৬০ মেট্রিক টন, চন্দনাইশ উপজেলা থেকে ৪২৫ মেট্রিক টন, সাতকানিয়া উপজেলা থেকে ৬১২ মেট্রিক টন, লোহগাড়া উপজেলা থেকে ৫৫৯ মেট্রিক টন, বাঁশখালী উপজেলা থেকে ৮১৬ মেট্রিক টন, আনোয়ারা উপজেলা থেকে ৩৮৮ মেট্রিক টন এবং কর্ণফুলী উপজেলা থেকে সংগ্রহের বরাদ্দ ঠিক করা হয়েছে ৭৭ মেট্রিক টন। এছাড়া নগরের পাঁচলাইশ থানা থেকে ৩৩ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর ওরশে ভক্তদের ঢল
পরবর্তী নিবন্ধজামায়াতের ১১ নেতাকর্মীর রিমান্ডের আবেদন