বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবেশীদের ছাড়িয়ে গেছে : চীনা ইংরেজি দৈনিক

| বুধবার , ১ জুন, ২০২২ at ৮:২৩ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অর্জনের একটি সুন্দর চিত্র তুলে ধরে চীনের একটি ইংরেজি দৈনিক লিখেছে, বাংলাদেশ এখন প্রতিবেশীদের, বিশেষত ভারত অপেক্ষা রাজস্ব ঘাটতি, মারচেন্ডাইজ বাণিজ্য ভারসাম্য, কর্মসংস্থান, ঋণ এবং জিডিপির সাথে আনুপাতিক বিনিয়োগ হারের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। হংকং ভিত্তিক ইংরেজি দৈনিকসাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছেবাংলাদেশের মানবউন্নয়ন কর্মসূচি, বিশেষত মেয়েদের শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে জন্মহার ও বাল্য বিবাহ হ্রাস পেয়েছে। খবর বাসসের।

আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাঙ্কদ্য ইনস্টিটিউট ফর পলিসি, অ্যাডভোকেসি এন্ড গভর্ন্যান্সের (আইপিএজি) চেয়ারম্যান প্রফেসর সৈয়দ মুনির খসরু দৈনিকটিতে সম্প্রতি লিখেছেন, গড় আয় বৃদ্ধি, জন্মহার হ্রাস ও শিশু পুষ্টির মতো মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এই অর্থনৈতিক অগ্রগতির ব্যাপকভিত্তিক সুফল পাচ্ছে। সেই তুলনায় ভারত অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক অগ্রগতির ফলে এ দেশের জনগণের জীবনমান বৃদ্ধি পেয়েছেযা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। খসরুর মতে, বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক তারকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, অন্যদিকে মানব উন্নয়ন সূচকে ভারতের অগ্রগতি খুবই কমবিশেষত অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলোতে এই অবস্থা খুবই শোচনীয়। বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর অর্থনৈতিক ভারতে নারী অংশ গ্রহণের হার ছিল মাত্র ১৯ শতাংশ, যেখানে বাংলাদেশে এই হার ছিল ৩৫ শতাংশ। খসরু লিখেছেন, ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ তার বিচক্ষণ আর্থিক ও ঋণ ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি এর সামাজিক নিরাপত্তা জাল ও অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক আরো বলেন, বাংলাদেশে বিগত ৪০ বছরে অর্থনৈতিক অগ্রগতি সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে অব্যহত রয়েছে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে আছে। যেখানে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জিডিপি হ্রাস পেয়ে ৬.৫৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, সেখানে ২০২০ সালে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৩.৫ শতাংশ। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে এক তৃতীয়াংশ অবদান রেখেছে কৃষি, তবে ২০১০ ও ২০১৮ সালের মধ্যে এ খাতে ১৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান বেড়েছে।

১৯৮০ সাল থেকে জিডিপিতে উৎপাদন খাতের অবদান দ্বিগুণ হয়েছে এবং ১৯৯০’এর দশক থেকে রপ্তানি ২০গুণ বেড়ে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে দেশের অর্থনীতিতে রেমিটেন্স আয় ছিল ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কম মজুরির শ্রমিকরাও দেশের অর্থনীতিতে এই অবদান রাখে। খসরু আশা করেন যে, শক্তিশালী রেমিটেন্স, রপ্তানি ও কৃষির কল্যাণে বাংলাদেশ ২০২৬ সাল পর্যন্ত মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবকেয়া ৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আদায় করল চসিক
পরবর্তী নিবন্ধরেলের জমি থেকে আড়াইশ সেমিপাকা ঘর উচ্ছেদ