প্রকৃতিতে এখন ফাগুনের হাওয়া। বসন্তের এই সময়ে পাহাড়ে ফুটেছে নানা রঙের ফুল। শতফুলের মাঝেও আপন সৌন্দর্য্যে প্রস্ফুটিত মান্দার, শিমুল, উদাল, গামারি। পাখিদের খুব প্রিয় একটি খাবার মান্দার ফুলের মধু। পাহাড় কিংবা সমতল সবখানেই মান্দার ফুলের সৌরভ ছড়িয়ে পরেছে। মান্দারের মধু খেতে দূর–দূরান্তের পাহাড় থেকে ছুটে আসে সুলভ বা দুর্লভ অনেক পাখি। দুর্গম বা দূরবর্তী পাহাড়ে সাধারণত দুর্লভ পাখিদের আনাগোনা বেশি থাকে।
সম্প্রতি মান্দার গাছে মদনা টিয়া, কালো ঝুঁটি বুলবুল, ভীমরাজ, হরবোলা, কালো মাথা বেনেবউ, কালো মাথা বুলবুল কয়েক প্রজাতির পাখির দেখা পেয়েছিলাম। এদের মধ্যে অন্যতম জলপাই বুলবুল। ছোট আকারের বৃক্ষচারী পাখি। বাংলাদেশে ৮ প্রজাতির বুলবুলদের মধ্যে অন্যতম। এটি সচারচর দেখা যায় না। বসন্তের ফুলের মৌসুমে এদের দেখা যায়। বিশেষত মান্দার ফুলের মধু খেতে এরা আসে। খাগড়াছড়ির কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ও মেরুং ইউনিয়নের দুর্গম এক গ্রামে এই জলপাই বুলবুল দেখা গেছে। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এক গ্রামের বাসিন্দা রবি চাকমা জানান, এখন পাহাড়ে বিভিন্ন ধরনে ফুল ফোটে। মান্দার গাছে এখন প্রচুর ফুল। ফুলের মধু খেতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আসে। আমাদের বিহার এলাকায় কোন শিকার হয় না। তাই এখানে পাখিসহ বন্যপ্রাণী নিরাপদে থাকে।
খাগড়াছড়ির শৌখিন আলোকচিত্রী সবুজ চাকমা জানান, পার্বত্য এলাকায় ৮ প্রজাতির বুলবুল দেখা যায়। এর মধ্যে জলপাই বুলবুল অন্যতম। তবে এটি বসন্তকালেই দেখা যায়। সচারচর বাংলা বুলবুল বা সিপাহী বুলবুল দেখা যায়।
জলপাই বুলবুল আকারে দোয়েলের মতো। এরা লম্বায় ১৯ সেন্টিমিটার। শরীরের রঙ জলপাই। মাথায় লালচে আভা। গলা, মুখ ও পেট জলপাই হলুদ। ওপরের চঞ্চু কালচে, নিচের চঞ্চু হলদে। লেজ লালচে–বাদামি। লেজতল লালচে। এদের বসতি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনে। এরা ফুল, ফল ও পোকামাকড় খায়। গাছের ডালে বাসা বাঁধে।