বন্ধের তালিকায় আরো এক কলেজ

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:০৭ পূর্বাহ্ণ

বেসরকারি আরো একটি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। হাতে গোনা শিক্ষার্থী, নিয়মিত অধ্যক্ষ ও পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকা, কমিটি না থাকা, প্রদত্ত ঠিকানায় গরমিলসহ নানা কারণে চট্টগ্রাম জিলা কলেজ নামের প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিক্ষাবোর্ডের এ সিদ্ধান্তের ফলে চলতি বছর (২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে) একাদশ শ্রেণিতে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না কলেজটি।

এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক আজাদীকে বলেন, কলেজটির নিয়মিত অধ্যক্ষ নেই। দীর্ঘ দিন ধরে কমিটি নেই। এছাড়া কাগজে-কলমে যে ঠিকানা উল্লেখ করা আছে, সেখানে গিয়ে কলেজটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর বাইরে প্রতিষ্ঠানটিতে গতবছরের শিক্ষার্থী সংখ্যাও হাতেগোনা। নিয়মিত শিক্ষকও তেমন নেই। বিশৃঙ্খল অবস্থা বলা চলে। যে অবস্থায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আসলে চলতে পারে না। সবমিলিয়ে কলেজটির ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে কলেজটি এবার কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না।

একই কারণে এর আগে আরো চারটি কলেজে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। ওই চার কলেজের মধ্যে রয়েছে- নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকার মেট্রোপলিটন কমার্স কলেজ, চকবাজার এলাকার ল্যাবরেটরি কলেজ, কোতোয়ালী এলাকার সিটি পাবলিক কলেজ, আগ্রাবাদ এলাকার চট্টগ্রাম সিটি বিজ্ঞান কলেজ। এর বাইরে স্বাধীনতা বিরোধী ব্যক্তি বিশেষের নামে স্থাপন করা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন না করায় হাটহাজারীর ফজলুল কাদের চৌধুরী আইডিয়্যাল স্কুল এন্ড কলেজের পাঠদানের অনুমতি বাতিল করা হয়। আর পাঠদানের অনুমতি বাতিলের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে শিক্ষাবোর্ড। প্রফেসর ড. মুনতাসির মামুনের এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের আদেশ মেনে এই প্রতিষ্ঠানটির পাঠদানের অনুমতি বাতিল করা হয় বলে জানিয়েছে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা আগের এই ৫ কলেজের তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হল চট্টগ্রাম জিলা কলেজ।

এখন সবমিলিয়ে ৬টি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। শিক্ষাবোর্ডের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কলেজগুলো এবার একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না। তবে এ ধরণের অন্যান্য কলেজগুলোর বিষয়েও পর্যায়ক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার। শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, আরো বেশ কিছু কলেজ এমন অবস্থায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছি। যাচাই-বাছাই করছি। পর্যায়ক্রমে এ ধরণের অন্যান্য কলেজগুলোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম জিলা কলেজ নামের প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করে। যাত্রালগ্নে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা উল্লেখ করা হয় নগরীর চকবাজারের অলি খাঁ মসজিদের সামনে। শুরু থেকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা, তিন বিভাগেই শিক্ষার্থী ভর্তি করায় প্রতিষ্ঠানটি। আগের বছরগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে লিফলেটসহ বিভিন্ন ধরণের প্রচারপত্র বিতরণ ও প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে কলেজটিকে। প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞান শাখায় ৮০টি এবং ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকে একশটি করে আসন থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে পূর্বে প্রচার করা এসব লিফলেট ও বিজ্ঞাপনে। তবে চকবাজার এলাকা থেকে প্রতিষ্ঠানটি পাঁচলাইশের মির্জারপুল এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে শিক্ষাবোর্ডকে কিছুই জানানো হয়নি।

শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারাও পূর্বে প্রদত্ত ঠিকানায় গিয়ে কলেজটি খুঁজে পাননি। এছাড়া নিয়মিত অধ্যক্ষ না থাকাসহ আরো বিভিন্ন কারণে কলেজটির ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে শিক্ষাবোর্ড সূত্র নিশ্চিত করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসম্পাদককে বাদ দিয়ে একাই সভা ডাকলেন সভাপতি
পরবর্তী নিবন্ধবাঁচানো গেল না শিশু সাইমাকে