বন্দর এলাকায় দূষণ করলে জেল জরিমানা

উন্নয়ন সমপ্রসারণে তহবিল ।। থাকবে চার সদস্যের পরিচালনা প্রশাসন বোর্ড

| বুধবার , ৬ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় দূষণ করলে দুই বছরের জেল এবং দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে নতুন আইন করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সংসদ। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল-২০২২’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলের পর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন। খবর বিডিনিউজের।
১৯৭৬ সালের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ বাতিল করে নতুন আইন করতে গত বছর ১৫ নভেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়। পরে সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে বলা হয়েছে, এ আইনের অধীনে কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে (যার শাস্তি উল্লেখ নেই এমন ক্ষেত্রে) সর্বোচ্চ ছয় মাসের শাস্তি এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। বন্দরের ভাড়া ও টোল আদায়ের বিষয়ে সরকারের কাছে অনুমোদন নিয়ে তফসিল করতে হবে। এক লাখ টাকা পর্যন্ত আদায়যোগ্য ভাড়া, টোল, রেইট, ফি ও মাশুল মওকুফের ক্ষেত্রে অনুমোদন নিতে হবে না। বন্দরের উন্নয়ন সমপ্রসারণে একটি তহবিল করার কথা বলা হয়েছে নতুন আইনে। একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে অনধিক চার সদস্যের একটি পরিচালনা প্রশাসন বোর্ড রাখা হয়েছে বন্দর পরিচালনার জন্য। প্রতি দুই মাসে অন্তত একটি বোর্ড সভা করার বিধান থাকলে আইনে। বিলে বলা হয়েছে, বন্দর এলাকায় কোনো জাহাজ বা যান্ত্রিক উপকরণের কারণে যদি বর্জ্য তৈরি হয়, তবে তার মালিককে বা মাস্টারকে বা প্রতিনিধিকে তা অপসারণ করতে হবে। অপসারণে সময়সীমা অতিক্রম করলে মাশুল দিতে হবে। বন্দর কর্তৃপক্ষ সেই বর্জ্য অপসারণ করবে। এর জন্য যে খরচ হবে তা দ্বিগুণ দায়ীকে দিতে হবে। কোনো ভাড়া, জরিমানা, ফি, টোল, মাশুল বা ক্ষতিপূরণ অনাদায়ী থাকলে বন্দর কর্তৃপক্ষ তার নিয়ন্ত্রণে থাকা পণ্য নিলাম করে অর্থ আদায় করতে পারবে। কোনো জাহাজের মাস্টার বা জাহাজে কর্মরত কারো অবহেলার কারণে যদি ডক, পিয়ার বা কোনো স্থাপনা বা কর্তৃপক্ষের কোনো ক্ষতি হয়, সেজন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করার সুযোগ থাকছে নতুন আইনে।
এই বিলের অধীন অপরাধগুলো মোবাইল কোর্টেও বিচার করা যাবে বলে বিধান রাখা হয়েছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোনো আদালত এই বিলের অধীনে সংঘটিত কোনো অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করবে না।
বিল নিয়ে আলোচনায় ৭০ অনুচ্ছেদ : বিলটি পাসের প্রক্রিয়ার সময় জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, তিনি এই প্রথম দেখলেন সংসদীয় কমিটি কোনো বিলে নতুন ধারা যুক্ত করেছে। এটা কমিটি করতে পারে কিনা সে বিষয়ে স্পিকারের রুলিং চান তিনি। পরে এ নিয়ে জবাব দিতে দাঁড়িয়ে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ সংসদের ক্ষমতা সম্পর্কে বলেন।
সংশোধনী প্রস্তাবের সময় জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সংসদের কি খুব একটা ক্ষমতা আছে? যিনি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা, তার হাতেই সব ক্ষমতা। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কারো কিছু বলার ক্ষমতা আছে? সদস্য পদ কি থাকবে? তিনি বলেন, যতক্ষণ সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ থাকবে ততক্ষণ সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নেই। বাজেটে সংসদ সদস্যদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। স্বাধীনভাবে বলার সুযোগ নেই।
বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা কতটুকু আছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্দর পরিচালনায় গতি বাড়বে
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে সাগরতলে অ্যাকুরিয়াম তৈরির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর