বন্দরে এবার আমদানি নিষিদ্ধ ‘ঘনচিনি’, দুই চালানে ৮৯ টন

রয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৭ জুলাই, ২০২১ at ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এবার চুনপাথরের উপকরণ ক্যালসিয়াম কার্বনেট এবং সোডার উপকরণ ডিসোডিয়াম কার্বনেট ঘোষণায় আমদানি নিষিদ্ধ ‘ঘনচিনি’ বা সোডিয়াম সাইক্লামেট অমদানি হয়েছে। ঢাকার দুই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সাদাত ট্রেড সেন্টার ও সুজানা ট্রেডিং উক্ত পণ্য আমদানি করেছে। এরমধ্যে সাদাত ট্রেড সেন্টারের নামে ৬৯ টন ও সুজানা ট্রেডিংয়ের নামে আসে ২০ টন ঘনচিনি। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাসায়নিক পরীক্ষায় মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির বিষয়টি উঠে আসে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘনচিনি আমাদের দেশে বিভিন্ন বেকারি ও মিষ্টান্ন পণ্য, বেভারেজ, চকলেট, কনডেন্সমিল্ক ও আইসক্রিমে ব্যবহার হয়ে আসছে। ঘনচিনি দিয়ে তৈরি খাবার মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এর ফলে ক্যান্সার, কিডনি ও লিভার বিকল, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসহ নানা জটিল রোগ হতে পারে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সরকার গত ২০০৬ সালে ঘন চিনি আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানায়, ঢাকার মিটফোর্ড রোডের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাদাত ট্রেড সেন্টার মালিক চীন থেকে ক্যালসিয়াম কার্বনেট ঘোষণায় ৬৯ টন ঘনচিনি নিয়ে আসেন। চালানটি খালাসে আমদানিকারকের মনোনিত আগ্রবাদ শেখ মুজিব রোডের সিএন্ডএফ এজেন্ট এন আর এন্টারপ্রাইজ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। আমদানিকারক চালান খালাসে ৩৫ শতাংশ শুল্ককরও পরিশোধ করে। তবে খালাসকালে সন্দেহ হওয়ায় চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট ইনভিস্টেগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম পণ্যের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠায়। পরবর্তীতে ল্যাবের রাসায়নিক পরীক্ষক আবদুল হান্নান স্বাক্ষরিত রিপোর্টে বলা হয়, উক্ত নমুনা ক্যালসিয়াম কার্বনেট নয়। এটি সোডিয়াম সাইক্লামেট বা ঘনচিনি। অপরদিকে ঢাকার কদমতলীর অপর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সুজানা ট্রেডিংয়ের নামে চীন থেকে ডিসোডিয়াম কার্বনেট ঘোষণায় ২০ টন ঘনচিনি আনা হয়। চালানটি খালাসে আমদানিকারকের মনোনীত আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার সিএন্ডএফ এজেন্ট এম হাসান এন্টারপ্রাইজ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। চালানটি খালাসে গত ১ মার্চ আমদানিকারক ৩০ শতাংশ শুল্ককরও পরিশোধ করে। তবে গোপন সংবাদ থাকায় খালাসকালে এআইআর টিম পণ্যের নমুনা রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠায়। ল্যাবের রিপোর্টে বলা হয়, নমুনা পরীক্ষায় ডিসোডিয়াম কার্বনেট বা সোডার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, আসলে পণ্যটি হচ্ছে সোডিয়াম সাইক্লামেট অর্থাৎ ঘনচিনি।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা দৈনিক আজাদীকে বলেন, সোডিয়াম সাইক্লামেট বা ঘনচিনি আমদানি নিষিদ্ধ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে আসা দুটি চালানের রাসায়নিক পরীক্ষায় ঘনচিনির অস্বিত্ব পাওয়া গেছে। অসাধু আমদানিকারকের বিরুদ্ধে আমাদের পরিস্কার বার্তা, মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য এনে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরিষা বীজ ঘোষণায় আমদানি নিষিদ্ধ পপি সীডস বা পোস্তদানা নিয়ে আসে পুরনো ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আজমাইন ট্রেড সেন্টার। পরবর্তীতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় মামলা করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যাংক লেনদেনের সময় বাড়ল এক ঘণ্টা
পরবর্তী নিবন্ধপাসপোর্ট সূচকে ৬ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ