ফসলি জমির মাটি এখন পুড়ছে ইটের ভাটায়

| শনিবার , ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:২২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি, আবহাওয়া, প্রাকৃতিক পরিবেশ সবকিছুই কৃষি নির্ভর। তাই প্রাচীনকাল থেকে এ দেশ কৃষি প্রধান। এ দেশের মাটি, পানি, বায়ু সবই কৃষির অনুকূলে। কৃষি আমাদের প্রধান পেশা, দেশের শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কৃষির সাফল্যে কমেছে খাদ্য আমদানির প্রয়োজনীয়তা। কৃষিজাত পণ্য রফতানিও করা হচ্ছে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। উদ্বেগের বিষয় হল, দেশের বিভিন্ন স্থানে তিন ফসলি কৃষি জমি ধ্বংস এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য নষ্ট করে গড়ে তোলা হচ্ছে ইটভাটা। ফলে দিন দিন কমছে আবাদি জমির পরিমাণ। ইটভাটা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ভাটায় বছরে ৫০-৫৫ লাখ ইট তৈরি হয়। প্রতি হাজার ইট তৈরি করতে প্রায় ৮৮ ঘনফুট মাটি প্রয়োজন। সেই হিসাবে একটি ইটভাটায় বছরে প্রায় পাঁচ লাখ ঘনফুট মাটি দরকার হচ্ছে। মালিকেরা এক হাজার ঘনফুট মাটি মাত্র ৫০০-৭০০ টাকায় কৃষকের জমি থেকে ক্রয় করে। ইটভাটার কারণে সবচেয়ে বেশি দূষিত হয় বাতাস। ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে গাছ, ফলমূল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। মানুষ সর্দি-কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ইট পোড়ানো কয়লা থেকে মারাত্মক ক্ষতিকর কার্বন-মনোক্সাইড নির্গত হয়। এতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি এবং খাদ্য ঘাটতি সত্ত্বেও প্রশাসনের যোগসাজশে দেশের বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার একর ফসলি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। এতে শুধু কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না, ক্ষতি হচ্ছে দেশ, জাতি, জীববৈচিত্র্যসহ পরিবেশের। তাই এই ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
মাজহারুল ইসলাম শামীম
শিক্ষার্থী, ফেনী সরকারি কলেজ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রকৃতির নিয়মে একে অপরের উপর নির্ভরশীল
পরবর্তী নিবন্ধনীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী : আধুনিক বাংলা কবিদের অন্যতম