প্রকৃতির নিয়মে একে অপরের উপর নির্ভরশীল

হ্যাপি ব্যানার্জ্জী | শনিবার , ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:২১ পূর্বাহ্ণ

অতঃপর জীবনের একটা নিদিষ্ট সময়ে এসে, সরাসরি কিংবা ভিন্নভাবে মনের সব অনুভুতি অন্য একটা মানুষের জন্য তৈরি হয়। কোনো ভাবে দুজনে একসাথে থাকার পূর্ণতা না পেলে, কিংবা অন্য কোনো ভাবে অনুমতি না পেলে দূরে যেতে যেতে আর কারো জন্য অনুভুতি সৃষ্টি হয় না। মানুষ তখন নিজেকে কঠোর, হৃদয়হীন, অনুভূতি-হীন মনে করে। কিন্তু বাস্তবতা! বাস্তবতাকে কি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব? বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে জীবন শুরু হয় নতুন মানুষের সাথে। অচেনা মানুষ, অচেনা পরিবেশ, সব অচেনা! শুরু হয় নতুন পথ চলা। বছরের পর বছর পাশে থেকেও যে মানুষটা সারাজীবনের জন্য নিজের হয় না, সেখানে অচেনা একজনের সাথে মানিয়ে চলা কেমন যেন নিজেকে আবদ্ধ করে রাখার মতো অবস্থা! কিন্তু আসলেই কি তাই? হঠাৎ করে ভালো লাগা থেকে যে ভালোবাসা তৈরি হয়, সেই ভালোবাসার চেয়েও নিজের রুমে ঘুমন্ত মানুষটাকে প্রতিদিন দেখতে দেখতে যে আপন ভাবটা চলে আসে, সেটার ভিত্তি মনে হয় একটু হলেও বেশি! সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্নান শেষে যে মেয়েটা ঠাকুর ঘরে পুজো দিতে দিতে শীতে কাঁপে, তার বাজানো ঘন্টার শব্দে যে মানুষটার ঘুম ভাঙে, সেই মানুষটাই মেয়েটার শীতে কাঁপার দৃশ্য দেখতে পেয়ে বেড থেকে নেমে নিজ হাতে একটা চাদর নিয়ে সামনে ঘুম ঘুম চোখে দাঁড়িয়ে থাকে মেয়েটিকে দেয়ার জন্য। এই মুহূর্তগুলো খুব স্থায়ীভাবে একে অপরের জন্য ভালোবাসা তৈরি করে দেয়। মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে গেলে যে মেয়েটার চোখ যায় পাশে শুয়ে থাকা মানুষটির দিকে, সেই মেয়েটাই কখনো একা ঘুমালে পাশে খালি থাকার জায়গাটাই মানুষটিকে বড্ড মিস করে। এভাবে দিন যেতে যেতে হয়তো বলা হয় না, বা বোঝা যায় না একে-অপরের উপর মায়া, ভালোবাসাটা কতটা বেশি। মুখে প্রকাশ না করলেও কিংবা মানতে না চাইলেও প্রকৃতির নিয়মে একে অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে যায়। এভাবে চলতে থাকে হঠাৎ আপন করে নেওয়া অচেনা মানুষটির সাথে জীবন। লেখক : সাহিত্যকর্মী

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅসময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু
পরবর্তী নিবন্ধফসলি জমির মাটি এখন পুড়ছে ইটের ভাটায়