প্রয়োজনীয়তা

মিতা দাশ | সোমবার , ৭ জুন, ২০২১ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

চাকরির একটা বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হলো পত্রিকার পাতায়। তাই ঐ তারিখের পেপারটা খুব যত্ন সহ তুলে রাখা হলো প্রয়োজনীয় ফাইলে। যথাসময়ে দরখাস্ত লিখে ইন্টারভিউ দেয়ার পরপরই পত্রিকাটির প্রয়োজনীয়তা গেলো ফুরিয়ে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হিসেবে বিক্রির জন্য রেখে দেয়া হলো বাইরে অন্যান্য ভাঙা জিনিস পত্রগুলোর সাথে। যে কাগজটি খুব দামী ছিলো দরখাস্ত লেখার আগে পর্যন্ত তার প্রয়োজন, পরীক্ষা দিয়ে আসার সাথে সাথে ফুরিয়ে গেলো। জীবনে এটাই হলো বাস্তবতা আমরা লেখার জন্য কলম কিনি ১০ থেকে ২০ টাকা দিয়ে। এবং কলমটা বুক পকেটে রাখি বেশ যত্নে। কিন্তু কালি শেষ হলেই তাকে ছুড়ে ফেলে দিই বাস্কেটে। এছাড়াও কত দাম দিয়ে গোলাপ কেনা হয় বিবাহ বার্ষিকীতে প্রিয় মানুষটিকে দেয়ার জন্য। আর পরের দিনই ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করে ফেলে দেয়া হয় ঝুড়িতে ময়লা আবর্জনার সাথে বাসি ফুল বলে। এরকম অনেক কিছু আছে, যা শুধু দরকার পর্যন্ত দামী থাকে, তারপর দরকার শেষ হলেই প্রয়োজনও শেষ। কিন্তু খেয়াল করে দেখুন, সোনা (গোল্ড) সামান্য হলেও, ভেঙে গেলেও সেটা কিন্তু কেউ ফেলে দেয় না। হীরে, মুক্ত এগুলো বেশ যত্ন করে রাখা হয় আলমিরার গোপন ড্রয়ারে। যাতে কেউ দেখতে না পায়। এতটা সযতনে আগলে রাখে, বাইরে থেকে কেউ বুঝতেই পারে না। এবার আরো কিছু মূল্যবান জিনিসের কথা বলি,যা বছরের পর বছর পুরানো হলেও কেউ ফেলে দেয় না। ডিকশনারি, বিভিন্ন পুরষ্কারের সনদপত্র, সার্টিফিকেট ও ভালো লেখকের বই। আজ ১০ টাকা দাম দিয়ে পত্রিকা কিনে যেমন কাল—‘কেজি দরে বিক্রি করে ১০ টাকায়,’ তেমনি এমন কিছু জিনিস হয়, যা কেনার পর পুরাতন, ময়লা পড়লেও তার দাম বরং দিন দিন বাড়তে থাকে। আসুন মানব জনমকেও দামী করে তুলি। বৃদ্ধাশ্রমে যেন কাউকে যেতে না হয়, অথবা পরিবারে থেকেও যেন বোঝা মনে না করে কেউ অথবা কোন দাম নেই বলে মূল্যায়ন না পাওয়া মানুষ যেন না হই আমরা। আমাদের কাজ, আমাদের ভালো আচরণ যেন হীরার চেয়েও দামী হয়,যাতে আমরা মূল্যবান মানুষ হিসেবে সবার কাছেই যেন প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে বিবেচিত হই সবসময়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকালির ছড়া দুঃখ মোচনে মাননীয় মেয়র ও ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের দৃষ্টি কামনা
পরবর্তী নিবন্ধসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম