প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা নির্বাচন নিয়ে সমালোচনার জবাবে বলেছেন, নির্বাচন যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুষ্ঠু হয়, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়, সেটাই এই নির্বাচনের (রংপুর সিটি নির্বাচন, ছয়টি উপ–নির্বাচনসহ সমপ্রতি অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচন) মধ্যদিয়ে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, আমি মনে করি, এরপরে আর কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা উত্থাপন করার সুযোগ পাবে না।
কারণ আমরা ক্ষমতায় থাকলেও মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আমরাই সংগ্রাম করেছি। কাজেই সেই ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব বলেই মনে করি। আর সেভাবেই এদেশে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সমাপনি বক্তব্যে এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, সংসদের প্রধান হুইপ নূর–ই–আলম চৌধুরী এবং বিরোধী দলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫ পরবর্তী অনেক নির্বাচন আমরা দেখেছি। করোনা মহামারী পরবর্তী রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সঙ্কট মোকাবেলায় আমরা কৃষি উৎপাদনের ওপর জোর দিয়েছি।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ১৯ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ আছে। যুদ্ধের কারণে সারাদেশে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গেছে। যত টাকাই লাগুক আমরা যেখান থেকে পারছি আমদানি করছি, যাতে দেশের কোনো মানুষের কষ্ট না হয়, সঙ্কটে না পড়ে। টাকার দিকে তাকাচ্ছি না। কারণ আমাদের রাজনীতিই হচ্ছে দেশের মানুষের কল্যাণ করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ আরও এগিয়ে যাক, সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি। একদিনে শত সড়ক, শত সেতু অতীতে কেউ কোনদিন উদ্বোধন করতে পেরেছে? এটা আওয়ামী লীগ সরকার পেরেছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে চ্যালেঞ্জ ছিল। নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের এই একটি সিদ্ধান্ত সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে। আমরাও যে পারি, তা আমরা প্রমাণ করেছি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলতেন– বাঙালি জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমিও বলি, বাংলাদেশকে আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। ২০২১ সালে আমরা রূপকল্প ঘোষণা করেছিলাম, সেটা আমরা বাস্তবায়ন করেছি। এখন ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা গড়ে তুলবো স্মার্ট বাংলাদেশ। ইনশাল্লাহ সেই স্মার্ট বাংলাদেশও আমরা গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
’৭৫ পরবর্তী ক্যু–পাল্টা ক্যু এবং অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালাবদলের কথা উল্লেখ করে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় থাকতে পেরেছিলেন। এরপর দেশে দীর্ঘদিন অবৈধ ক্ষমতা দখলের পালা চলেছে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বর্ণাঢ্য সফল রাজনৈতিক জীবনের কথা তুলে ধরে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, অত্যন্ত প্রাণবন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি সংসদে শেষ ভাষণ দিয়ে গেছেন।