প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পেলেন চসিক মেয়র রেজাউল

প্রজ্ঞাপন জারি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৩ আগস্ট, ২০২২ at ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ

প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল সোমবার মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের স্বাক্ষরে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর আগে গত ৭ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয়া হয়।
চসিকের ইতিহাসে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পাওয়া চতুর্থ মেয়র হচ্ছেন রেজাউল করিম চৌধুরী। ১৯৮৯ সালে পৌর কর্পোরেশন থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তর হওয়া সংস্থাটিতে এ পর্যন্ত ছয়জন (রেজাউল করিমসহ) মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করেন। পূর্বে তিনজন মেয়র প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পান। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চসিকের বর্তমান (ষষ্ঠ) পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন রেজাউল করিম চৌধুরী। ১১ ফেব্রুয়ারি শপথ নেন তিনি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বগ্রহণ করেন ১৫ ফেব্রুয়ারি।
প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা পাওয়ার পর দৈনিক আজাদীর কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত মেয়র হিসেবে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা প্রদান করায় আমি নিজে ও চট্টগ্রামবাসী জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই মর্যাদা দিয়ে কেবল আমাকে নয়, পুরো চট্টগ্রামবাসীকে সম্মানিত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ শহর। আমি সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যেন আমি গুরুদায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারি। তিনি বলেন, নেত্রী যে আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে মেয়র বানিয়েছেন এবং প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছেন সে বিশ্বাসের কিঞ্চিত পরিমাণ খেয়ানত করবো না। আমার কার্যদিবসের শেষ দিন পর্যন্ত সে আস্থা ধরে রাখব। সততা ও নিষ্ঠার সাথে নগরবাসীর সেবা করে যাব।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রামবাসীর প্রতিও আমি ধন্যবাদ জানাই। কারণ তারা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন বলেই মর্যাদা পেয়েছি। সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে উন্নয়ন সংগঠিত হচ্ছে তার সাথে আমাদের শহরকে সম্পৃক্ত করে চট্টগ্রামের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির হাব। সরকার কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, মীরসরাই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণসহ যে সকল মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তা সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম নগরী হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধ নগরী। এ নগরীকে নান্দনিক ও স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয়ার পর রেজাউল করিম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ষাট দশক থেকে রাজনীতি করছি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। দীর্ঘ এ সময়ে কোনো অবস্থাতেই নীতিবিচ্যুৎ হইনি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে নীতির উপর থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করে এ পর্যন্ত এসেছি। রাজনৈতিক জীবনে এমন কোনো কাজ করিনি যেটার জন্য জনগণ থেকে দূরে সরে যেতে হয়েছে। এসব কারণে নেত্রী আমার উপর আস্থা রেখেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রামের প্রথম মেয়র হিসেবে শপথ নেন জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাায় অভিষিক্ত প্রথম ব্যক্তি। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মেয়র ছিলেন বিএনপির মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। তিনিও প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পান। ১৯৯৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত টানা তিন বছর মেয়র ছিলেন প্রয়াত মেয়র এবি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র হওয়ার পর ২০০২ সালের ১৪ অক্টোবর তাকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপর ২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপির মোহাম্মদ মনজুর আলম এবং ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আ.জ.ম নাছির উদ্দীন মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করেন। এদের কাউকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেয়া হয়নি।
মন্ত্রীর মর্যাদা পেলেন ঢাকার দুই মেয়র : গতকাল জারিকৃত একই প্রজ্ঞাপনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে মন্ত্রীর পদমর্যাদা দেওয়া হয়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগৃহকর নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার অবকাশ নেই : মেয়র
পরবর্তী নিবন্ধভারতে গিয়ে অমন কথা বলিনি