ঈদুল আজহার ছুটির পরে আগামী ২৩ জুলাই থেকে টানা ১৪দিন সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে পোশাক কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্তে পোশাক শিল্পের রপ্তানি আদেশ বাতিলের আশঙ্কা করছেন বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কোরবানি ঈদের পরে আগামী ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনের সময় পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার ফলে তৈরি পোশাক ক্রেতাদের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে পণ্য চালান জাহাজিকরণ করা সম্ভব হবে না। ফলে রপ্তানি আদেশ বাতিল অথবা স্থগিত হয়ে যাবে, এমনকি বিমানে শিপমেন্ট করতে হবে। এতে পোশাক খাতে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে রুগ্ন শিল্পে পরিণত হবে। বর্তমানে আমেরিকা ও ইউরোপে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে পোশাক বিক্রিও বেড়েছে। ফলে যে কোন মূল্যে তারা দ্রুত পণ্য খালাস চায়। ইউরোপ এবং আমেরিকাতে আগামী বসন্ত ও গ্রীস্ম মৌসুমে প্রচুর রপ্তানি আদেশ পেয়েছে পোশাক শিল্প। এ সময়ে কারখানা বন্ধ রেখে চলমান রপ্তানি আদেশগুলো যথাসময়ে জাহাজিকরণ করতে না পারলে ভবিষ্যতের অর্ডারগুলো গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।
তিনি আরো বলেন, রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলো যথাক্রমে-ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভারত, চীন ও মিয়ানমারে কারখানা খোলা রেখে উৎপাদন পরিচালনা করছে। ফলে ক্রেতারা নতুন রপ্তানি আদেশগুলো ওইসব দেশে স্থানান্তর করতে পারে। এছাড়া কারখানা বন্ধ রাখা হলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য চালান খালাস নেয়া সম্ভব হবে না, বন্দরে কন্টেনার সংরক্ষণে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত হয়ে হ্যান্ডলিং কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে বহির্নোঙরে জাহাজের অবস্থান বৃদ্ধি পেয়ে কন্টেনার ও জাহাজ জট সৃষ্টি হয়ে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হবে। এছাড়াও সময়মত পণ্য চালান খালাস ও রপ্তানি করতে না পারার কারণে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে মারাত্মক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে। আমরা এখনও আশাবাদী যে, বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য তথা তৈরি পোশাক শিল্পকে বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য শিল্পবান্ধব প্রধানমন্ত্রী আগের মতো লকডাউনের মধ্যেও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনপূর্বক দেশের রপ্তানির স্বার্থে পোশাক শিল্প কারখানা খোলা রাখাসহ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানিকৃত পণ্য চালান খালাস ও রপ্তানির জন্য অনুমতি প্রদান করবেন।