পেট্রল সংকট কাটাতে অকটেন আমদানি

আনা হচ্ছে অতিরিক্ত ৪৫ হাজার টন ২০ শতাংশ ন্যাফতা মিশালে হবে পেট্রল

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৬ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

পেট্রলের চাহিদা মেটাতে ও ইস্টার্ন রিফাইনারিতে উৎপাদিত ন্যাফতা কাজে লাগাতে অকটেন আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। এর অংশ হিসেবে চাহিদার অতিরিক্ত ৪৫ হাজার টন অকটেন আমদানির কার্যক্রম ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বিপিসি বলছে, আমদানিকৃত অকটেনের (গ্যাসোলিন প্রিমিয়াম) সাথে ন্যাফতা ব্ল্যান্ডিং করে পেট্রল উৎপাদন করা হবে।
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পেট্রলের মান ৮৯ নির্ধারণ করে বিএসটিআই। এর আগে থেকে কনডেনসেট ফ্র্যাকশনেশন প্লান্টগুলো হতে বিএসটিআই এর মান অনুযায়ী জ্বালানি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। কিন্তু বিএসটিআই মানের জ্বালানি পাওয়ার নিশ্চয়তা না মেলার কারণে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সভাপতিত্বে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১ জুলাই থেকে ১২ প্লান্টকে কনডেনসেট বরাদ্দ বন্ধ করে দেয় বিপিসি। এরপর ১ সেপ্টেম্বর থেকে এসব প্লান্ট থেকে জ্বালানি নেয়াও বন্ধ করে দেয় বিপিসি। এদিকে দেশে পেট্রলের চাহিদার শতভাগ মেটানো হতো কনডেনসেট ফ্র্যাকশনেশন প্লান্ট ও সরকারি গ্যাসফিল্ডে উৎপাদিত পেট্রল দিয়েই। ১২ প্লান্ট থেকে জ্বালানি নেয়া বন্ধ করে দেয়ার পর সরকারি গ্যাস ফিল্ড ও ইস্টার্ন রিফাইনারি লি. (ইআরএল) হতে উৎপাদিত পেট্রল দিয়ে দেশের চাহিদার শতভাগ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে পেট্রলের চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। অকটেনের চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১২টি প্লান্ট থেকে ৬৪ হাজার ৮৩১ টন পেট্রল গ্রহণ করে বিপিসি। চলতি বছর পেট্রলের চাহিদা মেটানোর জন্য অতিরিক্ত ৪৫ হাজার মেট্রিক টন অকটেন আমদানি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দরপত্রও আহবান করা হয়েছে। এরমধ্যে বিদেশি তিন প্রতিষ্ঠান আবুধাবির ইনোক (এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি), চায়নার পেট্রোচায়না এবং ইন্দোনেশিয়ার বিএসপি (বুমি সিয়াক পাসাকো) দরপত্রে অংশ নেয়। বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গতকাল (২৫ অক্টোবর) সারাদেশে পেট্রলের মজুদ ছিল ১৬ হাজার মেট্রিক টন। যা দিয়ে আগামী ১৬-১৭ দিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
সূত্র জানিয়েছে, অকটেনের আরওএন (রিচার্স অকটেন নাম্বার) মান ন্যুনতম ৯৫, আর পেট্রলের আরওএন মান ৮৯। ইস্টার্ন রিফাইনারির মাধ্যমে আমদানিকৃত অকটেনের ৮০ শতাংশের সাথে ২০ শতাংশ ন্যাফতা ব্ল্যান্ডিং করে পেট্রল তৈরি করা হবে। এতে বিএসটিআই নির্ধারিত আরওএন মান ৮৯ নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে বিপিসি।
বিপিসির পরিচালক (অপারেশন ও পরিকল্পনা) সৈয়দ মেহদী হাসান দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘বিএসটিআই নির্দেশিত মানের পেট্রল সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২টি ফ্র্যাকশনেশন প্লান্টের অনুকূলে কনডেনসেট সরবরাহ বন্ধ করার পর ১ সেপ্টেম্বর থেকে এসব প্লান্ট থেকে উৎপাদিত জ্বালানি গ্রহণও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যে কারণে দেশে পেট্রলের চাহিদা পূরণে জন্য ৪৫ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত অকটেন আমদানি করা হচ্ছে। রোববার দরপত্র খোলা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ইস্টার্ন রিফাইনারিতে ক্রুড থেকে জ্বালানি তৈরির সময় কিছু ন্যাফতাও তৈরি হয়। আমদানিকৃত অকটেনের সাথে ৮০ঃ২০ অনুপাতে ন্যাফতা ব্লান্ডিং করে পেট্রল উৎপাদন করা হবে। এতে ন্যাফতাগুলো কাজে লাগানো যাবে, পেট্রলের চাহিদাও মেটানো সম্ভব হবে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধমানবতার ভিন্ন উচ্চতায় গাউসিয়া কমিটি
পরবর্তী নিবন্ধস্ট্র্যান্ড রোডে জনদুর্ভোগের জন্য ওয়াসাকে দায়ী করলেন সুজন