পৃথিবীর সবচাইতে বড় শক্তি ভালোবাসা

ময়মী খোন্দকার | শুক্রবার , ৯ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

সালাম, ‘আসসালামু আলাইকুম’, ‘আদাব’ ‘নমস্কার’; বড়-ছোট-ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলের জন্যেই প্রযোজ্য। বয়েস কিংবা পদে বড় বলেই যে তাঁকে আগে সালাম দিতে হবে, অন্যদিকে পদে কিংবা বয়সে ছোট বলেই তাঁকে আগে সালাম দেওয়া যাবে না, একইসাথে পদহীন হলে অর্থাৎ রিকশাচালক-ফেরিওয়ালা এমন পেশার মানুষ হলে যে তাঁকে সালামই দেওয়া যাবে না; এরকম নিয়ম যে লিখিত কিংবা অলিখিতভাবে কোথাও নেই তা বুঝতে ব্যক্তি আমার ভীষণ সময় লেগে গিয়েছিলো! একদিন খেয়াল করলাম আমারই বয়সী একজন নারী, সম্পর্কে আমার বান্ধবীই বলা চলে; দোকান থেকে কেনাকাটা করার পরে দোকানীকে সালাম জানিয়ে দোকান ত্যাগ করছেন, দোকানী মুহূর্তের জন্যে খানিকটা বিব্রত হলেও বোঝাই যাচ্ছে তিনি দারুণ প্রসন্ন হয়েছেনও বটে।

একই ঘটনা ঘটেছে রিঙাচালক চাচার ক্ষেত্রেও! উক্ত নারী যিনি সম্পর্কে আমার বান্ধবী, তিনি যখন রিকশাচালক চাচাকে সালাম দিয়ে রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দিচ্ছিলেন, হতবিহ্বল চাচা এত তৃপ্তি নিয়ে সালামের জবাব দিলেন যে বোঝাই যাচ্ছে বহুদিন পরে হৃদয়ে তিনি এতটা প্রশান্তি পেয়েছেন।

কথায় আছে ‘সম্মান পেতে হলে, সম্মান দিতে হয়’; আমি আমার ব্যক্তিজীবনে যেদিন থেকে সকলকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া শুরু করলাম আমার পৃথিবীটাই যেনো পালটে গেলো! পৃথিবী সবচাইতে বড় শক্তি হলো ভালোবাসার শক্তি। সম্মান-শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা দিয়ে এই পৃথিবীতে সকল ভালো কিছুর সংস্থাপন সম্ভব।

আর সেই শুরুটা হোক এখনই। ছোটো-বড়-ধনী-গরীব সকলেই আগে হোক আর পরে ‘সালাম’, নমস্কারের মতন শুভেচ্ছা বা সম্মান পাওয়ার যোগ্য, আর তা প্রদান করা আমাদের কর্তব্য। সম্মান প্রদান-সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে আমরা ধনী-গরীব-ছোট-বড় এহেন ধরনের কোনোরূপ কোনো বিভেদ তৈয়ার না করি।

সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে আমরা কোনো কার্পণ্য না করি। তবেই না আমরা ব্যক্তিক জীবনে শোভন একটি সমাজ অর্জন করতে পারবো, শুধু তাই নয়; একইসাথে পরের প্রজন্মকে উপহার হিসেবে দিয়ে যেতে পারব ‘চমৎকার একটি সমাজ’।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমি যেন অন্যের মাথাব্যথার কারণ না হই
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে বিশ্বজয়ী হাফেজ তাকরিম : জান্নাতি সূরের মূর্ছনা