পুলিশ পরিচয়ে তরুণকে অপহরণের চেষ্টা

বাকলিয়া ও কর্ণফুলী থেকে গ্রেপ্তার ৫

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৫ আগস্ট, ২০২২ at ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে নগরীতে পুলিশ পরিচয়ে বাস থেকে নামিয়ে এক তরুণকে জোরপূর্বক অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে একদল দুর্বৃত্ত। ওই তরুণ নেত্রকোনার আওয়ামী লীগ দলীয় এক জনপ্রতিনিধির ব্যক্তিগত সহকারী বলে জানা গেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নেত্রকোনার আওয়ামী লীগ দলীয় দুই জনপ্রতিনিধির দ্বন্দ্বের জেরে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে পৌর মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারীকে অপহরণের চেষ্টা হয়েছে। পুলিশ এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর বাকলিয়া থানার তুলাতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার শিকার সাগর খান (২০) নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র মো. আলাউদ্দিন আলালের ব্যক্তিগত সহকারী এবং স্থানীয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আলী আকবর (২৪), শহীদুল ইসলাম শাহীন (২৫), মো. রবিন (২৫), মো. আরাফাত (২২), মো. মিনহাজ (২১)। এরা বাকলিয়া এলাকার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, মেয়র আলাউদ্দিন আলাল পরিবারের সদস্য ও অনুসারীদের নিয়ে গত ৩০ জুলাই কঙবাজারে ভ্রমণে যান। সঙ্গে নিয়েছিলেন ব্যক্তিগত সহকারী সাগরকেও। বুধবার রাতে তিনি কঙবাজার থেকে নেত্রকোনা ফিরছিলেন। ব্যক্তিগত গাড়িতে মেয়র ও তার পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। পেছনে বাসে সফরসঙ্গীরা ছিলেন। বাস শাহ আমানত সেতু পার হওয়ার পর কৃত্রিম উপায়ে যানজট সৃষ্টি করলে বাসের গতি স্থিমিত হয়ে যায়। তুলাতলী এলাকায় পৌঁছার পর ১০-১২ জন যুবক পুলিশ পরিচয়ে বাসে ওঠে। এ সময় তারা কয়েকজনের ব্যাগ তল্লাশি করে নাম ধরে সাগরের খোঁজ জানতে চায়। সাগর নিজের পরিচয় দেওয়ার পরপরই তাকে কলার ধরে টেনে বাস থেকে নামিয়ে ফেলে। সাগরের চিৎকারে বাসে থাকা মেয়রের অন্য সফরসঙ্গীরা আকবর নামে একজনকে ধরে ফেলে।

ওসি রহিম জানান, ঘটনার সময় তুলাতলী এলাকায় এক পুলিশ সদস্য বিষয়টি দেখতে পান। তিনি জানানোর পর থানা থেকে পুলিশ গিয়ে সাগর ও আকবরকে থানায় নিয়ে যায়। মেয়র ও সফরসঙ্গীদের দেয়া তথ্যমতে এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে আরও চারজনকে শনাক্ত করা হয়। রাতেই বাকলিয়ার বিভিন্ন এলাকা ও কর্ণফুলী থানার মইজ্জ্যারটেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ভোরে মেয়র ও সফরসঙ্গীরা নেত্রকোনার উদ্দেশে রওনা দেন।

কেন এই অপহরণ চেষ্টা, জানতে চাইলে ওসি আব্দুর রহিম বলেন, এলাকাভিত্তিক দ্বন্দ্বসহ আরও বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। তথ্যগুলো আমরা যাচাইবাছাই করে দেখছি। তদন্তের পর বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

তবে তদন্ত প্রক্রিয়ায় যুক্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজাদীকে বলেন, বালুর মহাল লিজ ও ঠিকাদারি নিয়ে পৌর মেয়র আলাউদ্দিন ও দুর্গাপুর উপজেলার একজন ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে বিরোধ চলছে। এর জেরে সাগরকে অপহরণ করে মেয়রকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বাকলিয়া এলাকার সোহেল নামে এক সন্ত্রাসীকে ভাড়া করা হয়েছিল। সোহেল এলাকায় রাজনৈতিক বড় ভাই হিসেবে কিছু কিশোর-তরুণের কাছে পরিচিত। বড় ভাইয়ের নির্দেশে সাগরকে বহনকারী বাস কঙবাজার থেকে নজরদারিতে রাখা হয়। বাস বাকলিয়ায় আসার পর সেখান থেকে সাগরকে অপহরণের চেষ্টা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভাঙচুর অতঃপর…
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরে ভিড়