বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরে ভিড়

এলইডি স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনালেখ্যের বিভিন্ন তথ্যচিত্র

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৫ আগস্ট, ২০২২ at ৭:০৫ পূর্বাহ্ণ

স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শনার্থীরা টাচ স্ক্রিনে আঙ্গুল স্পর্শ করতেই এলইডি টিভির সামনে ভেসে আসছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনালেখ্যের বিভিন্ন তথ্যচিত্র। এই প্রজন্মের শিক্ষার্থী এবং তরুণরা এলইডি স্ক্রিনে-দেখছেন এবং শুনছেন-বঙ্গবন্ধুর ছাত্রজীবন, বেড়ে ওঠা, মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মাধ্যমে গণমানুষের প্রাণের নেতা হয়ে ওঠার গল্প। এছাড়াও কালার স্ক্রিনে গল্পের আঙ্গিকে খুব সহজেই পরিচিত হয়ে উঠছেন বঙ্গবন্ধুর শৈশবের দিনগুলোর সঙ্গে।

দেখার সঙ্গে সঙ্গে যেন দর্শকরা ভালোভাবে শুনতে পারেন সে জন্য প্রতিটি এলইডির সাথে রাখা হয়েছে হেডফোনের ব্যবস্থা। এতে দেখানো হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য ও ঐতিহাসিক সাত মার্চের ভাষণ।

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে দেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন ও স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে বাংলাদেশ রেলওয়ে সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তৈরি করেছে দেশের প্রথম ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’। গত ১লা আগস্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সমাজের নানান শ্রেণী পেশার মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ৯ নম্বর প্লাটফর্মের লাইনে অবস্থান করছে।

শুধু বড় রেলওয়ে স্টেশন নয়, দেশের সবকটি রেলওয়ে স্টেশনে নির্ধারিত দিন ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরটি দাঁড়ানো থাকবে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের জন্য এটি উন্মুক্ত রাখা হবে বলে জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী।

তিনি জানান, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল মিটারগেজ একটি বগিতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি তৈরি করেছে সর্বোচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেলের একটি কোচের দুইপাশে রয়েছে ৩০টি এলইডি স্ক্রিন। এরমধ্যে ১০টি এলইডি টিভি এবং ২০টি এলইডি স্ক্রিন রয়েছে। সেই স্ক্রিনে আঙ্গুল স্পর্শ করতেই ভেসে আসছে বঙ্গবন্ধুর পুরো জীবনালেখ্য।

শিক্ষার্থীসহ নানান শ্রেণী পেশার মানুষ এই ভ্রাম্যমান জাদুঘরটি দেখার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় করছেন। প্রথম ধাপে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এবং তারপর বিরতি দিয়ে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ঘটনা প্রবাহ দর্শনার্থীদের দেখার সুযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ভিডিও নির্মাণ করা হয়েছে স্থিরচিত্রের সমন্বয়ে। কোচের এক প্রান্তে একটি বড় এলইডিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ভাষণসমূহ এবং থিম সংসহ জাতির জনকের উপর রচিত অন্যান্য গান প্রচার করা হচ্ছে।

শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত জাদুঘরটিতে রয়েছে ‘জয় বাংলা’ লেখার আদলে তৈরা করা একটি বুক সেলফ। এছাড়া জাদুঘরটিতে ১২টি টেবিলে স্থাপন করা হয়েছে-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর টুঙ্গিপাড়া আদি পৈতৃক বাড়ির প্রতিরূপ, জাতির পিতার ব্যবহৃত চশমার প্রতিরূপ, ঐতিহাসিক মুজিব কোটের প্রতিরূপ, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধির প্রতিরূপ, পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের ছবি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি, জাতীয় স্মৃতি সৌধের প্রতিরূপ, মুজিব নগর স্মৃতি সৌধের প্রতিরূপ, বঙ্গবন্ধুর লেখা-কারাগারের রোজনামচা, নৌকার ছবি, মুজিব শতর্বষের লোগো। এছাড়াও জাদুঘরটিতে ১৯২০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বেড়ে ওঠা, বঙ্গবন্ধুর ছাত্র জীবন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সংগ্রামী জীবন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বিজয় অর্জনসহ ৭৫’এর শোকাবহ ১৫ আগস্টের ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে। প্রায় দেড় বছর সময় ধরে ঐতিহাসিক এই ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানান, জাদুঘরটির সাজসজ্জাকারী ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট প্রতিষ্ঠান ইভন্টকম-এর দায়িত্বরত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপুলিশ পরিচয়ে তরুণকে অপহরণের চেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধআজ শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী