পুরোদমে উৎপাদনে আসছে ২০২৪ সালে

মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ।। জানুয়ারিতে প্রথম ইউনিট দ্বিতীয় ইউনিট জুলাইয়ে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১ অক্টোবর, ২০২২ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

মহেশখালী মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরোদমে উৎপাদনে আসছে ২০২৪ সালে। প্রথম ইউনিট উৎপাদন শুরু হবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন শুরু হবে জুলাই মাসে। ৫১ হাজার সাড়ে ৮০০ শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য মাতারবাড়ি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির কাজ ইতিমধ্যে পোর্ট ও প্লান্টের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৮২ শতাংশ। এছাড়া প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৬৫ শতাংশ।
গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাব কমিটির আহ্বায়ক সাবের হোসেন চৌধুরী এমপির নেতৃত্বে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনের পর বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম সংসদীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান। এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক আজাদীকে জানান, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে শুরু হবে। একই বছরের জুনে দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎও উৎপাদন শুরু হবে। গত বৃহস্পতিবার সাবের ভাই মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। এসময় প্রকল্প পরিচালক প্রকল্পের বর্তমান অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে এসময় আমিও সাথে ছিলাম। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে আমাদের টার্গেট অনুযায়ী ২০২৪ সালে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হবে। তিনি জানান, দ্রুতই এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। এই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ২০১৪ সালে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক। যেটি দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। কারণ এখানে কয়লা আমদানির জন্য গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি, চ্যানেল খনন, কয়লা খালাসের জন্য জেটি এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথ অর্থায়নে এ প্রকল্পের কাজ করছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। গভীর সমুদ্রবন্দরের জেটির নির্মাণ কাজ শেষের পথে। এরইমধ্যে জেটিতে পরীক্ষামূলকভাবে ভিড়েছে একটি বিদেশি জাহাজ।
প্রকল্প পরিচালক সূত্রে জানা যায়, পরিদর্শনকালে সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি এই প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান এবং এই প্রকল্পের কারণে পরিবেশ দূষণ হবে কিনা জানতে চান? তখন কর্তৃপক্ষ জানান পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জাহাজ থেকে কয়লা নামানোর সময় ছাড়া কয়লা আর দেখা যাবে না। এটি নির্দিষ্ট জেটির মাধ্যমে সরাসরি প্লান্টে চলে আসবে। একইভাবে বঙ্গোপসাগরে চলে যাবে। এতে পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা তেমন একটি নেই। তিনি জানতে চান লোকবল নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে কিনা। এসময় প্রকল্প পরিচালক বলেন ইতিমধ্যে সাড়ে ৩ হাজার মানুষ প্রকল্পে কাজ করছেন। তৎমধ্যে ১১৭৫ জন রয়েছেন বিদেশি। আর ৮০ শতাংশ লোক রয়েছে বিভিন্ন টেকনিশিয়ান। এরা সবাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। আর ২০ শতাংশ মানুষ টেকনিশিয়ান নয়। এদের নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
পরিদর্শনকালে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন মজুমদার এমপি, আবিদা আঞ্জুম মিতা এমপি, পরিকল্পনা কমিশনের সচিব, কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশব্দ দূষণে অতিষ্ঠ নগরবাসী
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশ ১২ অক্টোবর