পুতুল ঘরের বাবা

সালসাবিল করিম চৌধুরী | রবিবার , ১৯ জুন, ২০২২ at ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

আমাকে মেলা থেকে একটা বাবা কিনে দাও! হারানো বাবাকে আমার আবার ফিরিয়ে দাও। অনেকগুলো বছর কেটে গেল আমার সকালে বাবার জুতো আর টাই গোছানোর দিনগুলো ভুলতে। রাতের খাবারে বাবার তুলে রাখা মাংসের টুকরোতে এখন বাবা লেগে আছে। ভুলে গেছি অনেককিছু। বাকি যা আছে তা শুধু চাপা কষ্ট। অনেক না বলা কথার পেছনে লুকিয়ে আছে বাবা হারানোর অনেক কান্না।

সীমাহীন অভিমান আর লজ্জা! অঝোর ধারায় বৃষ্টি নিয়ে বেঁচে আছি এই নিষ্ঠুর ভুবনে। জীবনে অনেক মানুষের কান্না দেখেছি। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে প্রিয় সখীর কান্না দেখেছি। ডুকরে ডুকরে কাঁদছিল সে। চোখে জল নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম কাঁদিস কেন? উত্তরে সে বলল বাবার জন্য কাঁদি! বাবা নেই আজ কতটা বছর তা ভেবে কাঁদি। আমি ভাবনায় পড়ে গেলাম! চোখের কোণায় মনের অজান্তে নোনা জল গড়াচ্ছে।

এবার সে আমাকে বলল তবে তুই কাঁদিস কেন? আমিও বললাম বাবার জন্য কাঁদি! সে হাসল আর বলল কেন? আমি বললাম তোর বাবা নেই বলে কাঁদিস আর আমার আছে বলে কাঁদি! মানুষ একটাই শুধু অনূভুতিটা ভিন্ন। এ জগতে সব হারিয়ে শূন্য আমি আকাশের ঠিকানায় স্বপ্ন বুনি। ঐ নীল আকাশে যদি একবার সহসা যেতে পারি আমি তবে আকাশের বিশালতায় বসা মেলা থেকে একটা বাবা কিনব! আমার পুতুল ঘরে একটা বাবা থাকবে, বই পড়বে আমার সাথে, কিশোর কুমারের গান গাইবে, মণ্ডামিঠাই আর সমুচার ভাঁজে পেঁয়াজ বাছবে! হা হা হা করে আমি হাসব, মশার কামড়েও ঢং করে ব্যান্ডেজ লাগাবো। আদিখ্যেতা আর মিথ্যামিথ্যি ন্যাকামো করে আমি একটু আদর নিব। সত্যি আমি মেলা থেকে একটা বাবা কিনব, আমার পুতুল ঘরের বাবা!

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাবার আদর
পরবর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে