সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর আলীনগরের পাহাড়খেকো ইয়াছিন বাহিনীর প্রধান ইয়াছিন অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সীতাকুণ্ড মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ইয়াছিন নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানা কেশারপাড় গ্রামের শামশুল হকের পুত্র। সে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জঙ্গল সলিমপুরে বসবাস করছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক সরকারি পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জঙ্গল সলিমপুরে সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে যায়। এ সময় তাদের গাড়ি বহর থেকে নামিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আরিফকে অস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর করে ইয়াছিনসহ তার বাহিনীর সদস্যরা। ভাঙচুর করেন ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারও।
এ ঘটনায় আরিফের ভাই আবদুল হালিম বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেন। জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরের সম্রাট খ্যাত ইয়াছিনকে দীর্ঘদিন ধরে গ্রেপ্তার করতে মরিয়া হয়ে উঠে পুলিশ। গতকাল দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের আদালত চত্ত্বরের আইনজীবী ভবনের এক কক্ষে ইয়াছিন আছেন মর্মে পুলিশ খবর পায়। এরপর গোপনে সীতাকুণ্ড থানার পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ওৎ পেতে থাকে। আইনজীবী ভবন হতে বের হলে তাকে কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সীতাকুণ্ড মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, ইয়াছিন একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, গুম ও নাশকতাসহ সীতাকুণ্ড থানায় ১৮টির অধিক মামলা রয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলম বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ পরিদর্শনে যায়।
এ সময় আলীনগর প্রান্তে ইয়াছিন বাহিনীর নেতৃত্বে পরিদর্শন টিমের গাড়ি বহর হতে স্থানীয় মেম্বারকে নামিয়ে মারধর করা হয়। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সোমবার ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী ইয়াছিন সীতাকুণ্ডে ভূমিদস্যু ও পাহাড়খেকো হিসেবে পরিচিত। প্রচার আছে তিনি দীর্ঘদিন হতে সলিমপুর এলাকায় সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা দখলের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। সরকারি পাহাড় কেটে প্লট বানিয়ে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ইয়াছিন আমিন জুট মিলের কর্মচারী ছিলেন। তার বাবা সিএনজি অটোরিকশা চালক ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গল সলিমপুরে সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করেছিলো সন্ত্রাসী ও পাহাড়খেকো ইয়াছিন। অবৈধ পন্থায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছে সে। তার কাছে ওই এলাকার সবাই জিম্মি। এই সন্ত্রাসী ও পাহাড়খেকোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।