পান্তা আলুভর্তায় অস্ট্রেলিয়া জয়

মাস্টারশেফে দ্বিতীয় রানারআপ কিশোয়ার চৌধুরী

| বুধবার , ১৪ জুলাই, ২০২১ at ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

গ্রামবাংলার মানুষের আবহমানকালের খাবার পান্তাভাত আর আলুভর্তা পরিবেশন করে রান্না বিষয়ক জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ায় দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার চৌধুরী। এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন জাস্টিন। তিন ফাইনালিস্ট জাস্টিন, পিট ও কিশোয়ারকে নিয়ে দুদিন ধরে চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। খবর বিবিসি বাংলার।
প্রথম দিন ফাইনাল ডিশে কিশোয়ার রান্না করেন স্মোকড ওয়াটার রাইস, আলুভর্তা ও সার্ডিন। অর্থাৎ বাঙালির কাছে চিরচেনা পান্তাভাত, আলু ভর্তা ও সার্ডিন মাছ ভাজি। ফাইনাল ডিশ রান্না নিয়ে তিনি বিচারকদের বলেন, প্রতিযোগিতায় এমন রান্না সত্যিই চ্যালেঞ্জের। সাধারণ রেস্টুরেন্টে এমন রান্না হয় না। কিন্তু বাঙালির কাছে এটা পরিচিত রান্না। আর ফাইনাল ডিশ হিসেবে এটা রেঁধে নিজের তৃপ্তির কথাও জানান তিনি। এই রান্না দেখে ও খেয়ে বিচারকেরা অভিভূত। তিনজনেই দশে দশ দেন কিশোয়ারকে। তবে চূড়ান্ত পর্বের শুরুটা ছিল চ্যালেঞ্জের। তিনি হাঁসের একটি পদ রান্না করা শুরু করেছিলেন। বিচারকেরা তার রান্না দেখতে এলেন। সবকিছু দেখে জিজ্ঞেস করলেন, এখানে কিশোয়ার কোথায়? তারপরই তিনি মেন্যু পরিবর্তন করার চিন্তা করেন। ফাইনাল ডিশ হিসেবে পরিবেশন করেন বাঙালির চির পরিচিত আলুভর্তা, পান্তাভাত ও সার্ডিন মাছ। এই মাছের স্বাদ ইলিশ মাছের কাছাকাছি। চূড়ান্ত পর্বে ফাইনাল ডিশ রেঁধে ৫১ নম্বর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। প্রথম স্থানে ছিলেন পিট ৫৩ নম্বর নিয়ে।
তবে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল রেজাল্টের আগেই লাখ লাখ বাঙালির মন জয় করে নিয়েছেন তিনি। সমপ্রতি ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত এবং জনপ্রিয় কয়েক পদের রান্নার ভিডিও। সঙ্গে পরিচিতি পান এসবের রাঁধুনি।
লাউ চিংড়ি, বেগুন ভর্তা, খিঁচুড়ি, মাছ ভাজা, আমের টক, খাসির রেজালা-মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় একের পর এক এমন মুখরোচক খাবার রান্না করে বিচারকসহ বিভিন্ন ভাষাভাষীর দর্শকের নজর কাড়েন কিশোয়ার। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশে প্রচলিত নানা ধরনের খাবারকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার কারণেই ৩৮ বছর বয়সী এই শেফকে অন্য সব প্রতিযোগী থেকে আলাদা করেছে।
কিশোয়ার চৌধুরী বিজনেস ডেভেলপার। পারিবারিক প্রিন্টিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়ায়। তবে পারিবারিক আবহটা ছিল বাঙালিয়ানা। বাবার বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরে আর মা কলকাতার বর্ধমানের। দুজনে প্রায় ৫০ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। তবে বিদেশে বসবাস করলেও নিজের দেশের ভাষা, সংস্কৃতি চর্চা বজায় রেখেছেন কিশোয়ারের বাবা-মা। সেটা সন্তানদেরও ধারণ করতে উৎসাহিত করেছেন।
দুই সন্তানের মা কিশোয়ার জানান, মূলত ছেলের উৎসাহে মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ায় অংশগ্রহণ। তার চার বছর বয়সী শিশুকন্যা সেরাফিনা ও বারো বছর বয়সী পুত্র মিকাইল। পাশে ছিলেন জীবনসঙ্গী এহতেশাম নেওয়াজ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন শের বাহাদুর দেউবা
পরবর্তী নিবন্ধএখনও জমেনি পশুর হাট