পাচারের অর্থ ফেরাতে ৮ দেশের সঙ্গে চুক্তির উদ্যোগ দুদকের

| বুধবার , ৯ নভেম্বর, ২০২২ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধার এবং এ সংক্রান্ত সাক্ষ্য প্রমাণ পেতে আট দেশের সঙ্গে আইনি সহায়তা চুক্তি করার উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। তিন সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স ট্রিটি বা এমএলএটির একটি খসড়া করতে একটি কমিটি কাজ করছে বলে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। খবর বিডিনিউজের।
মাহবুব হোসেন বলেন, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ, রেকর্ড সংগ্রহ, পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি করার জন্য দুদকের পক্ষ থেকে গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়। এছাড়া বিদেশে পাচার হওয়ার সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের ষষ্ঠ সভাতেও আইনি সহায়তা চুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে আর্থিক বিভাগে একটি অনুরোধপত্র পাঠানো হয় জানিয়ে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, সেই প্রেক্ষিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত ১ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট এজেন্সিদের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করে। ওই সভায় খসড়া এমএলএটি তৈরির বিষয়ে বিএফআইইউর এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

এ কমিটি আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে খসড়া এমএলএটি তৈরি করবে। তা প্রস্তুত হওয়ার পর এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে তারা এগিয়ে যাবেন। জাতিসংঘের ‘কনভেনশন এগেইস্ট করাপশন’ এর আলোকে এই চুক্তি হবে জানিয়ে দুদক সচিব বলেন, এই ট্রিটি হলে বিভিন্ন দেশের ভেতরে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা বা তথ্য যাচাই করা বা আদান-প্রদান করা সহজ হবে, সেই লক্ষেই কার্যক্রম চলছে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্টেন্স বা এমএলএ চুক্তির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য গত ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউ তিন মাস সময় বেঁধে দেয় হাই কোর্ট। সে বিষয়টি উল্লেখ করে দুদক সচিব বলেন, উচ্চ আদালত থেকেও এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা রয়েছে, যাতে এটি তাড়াতাড়ি করা হয়।

অর্থ পাচার আইন ‘সংশোধন’ চায় কমিশন: অর্থ পাচার সংক্রান্ত সব ধরনের অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্তে মানি ল্‌ন্ডারিং আইনের সংশোধন চেয়ে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। আইনটি সংশোধন হলে অর্থপাচার প্রতিরোধ ও দুর্নীতি বিরোধী কাজ সহজ হবে বলে মনে করেন কমিশনের সচিব মাহবুব হোসেন।

একটি মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পর্যবেক্ষণে রয়েছে যে, অ্যানি ফর্ম অব করাপশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সে বিষয়ে অনুসন্ধান, তদন্ত বা আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারবে। এটা বিজ্ঞ আদালতের আদেশ, অবশ্যই মানব। কিন্তু আমাদের যে বেসিক আইন, সেটি সংশোধন করার জন্য আদালতের নির্দেশনার বিষয়টি উল্লেখ করে আমরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ করেছি। আইনটি সংশোধন হলে অর্থ পাচার প্রতিরোধে কমিশনের কর্মকাণ্ড আরও প্রসারিত হবে জানিয়ে সচিব বলেন, আইনটি সংশোধন হলে.. মানি লন্ডারিং আইনের এখন যেহেতু একটি ধারায় অনুসন্ধান করতে পারি, তখন আটটি ধারায় অনুসন্ধান-তদন্ত করতে পারব। তখন অর্থ পাচারের বিষয়গুলো দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ করতে সহজ হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধদোকান ছিল প্রায় ৪শ বায়েজিদ সড়কের ৬০টি দোকানও উচ্ছেদ হয়েছে