ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে রমজান উপলক্ষে পর্যাপ্ত পণ্য আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে সরবরাহ বাড়ার জেরে একমাত্র ভোজ্যতেল ও চিনি ছাড়া বাকিসব পণ্যের দাম নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকটের জেরে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়বে সবাই এমন আশঙ্কা করছিল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বর্তমানে প্রায় সব পণ্যের দাম কমছে। অস্ট্রেলিয়ান ছোলা আমদানি করে ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুণছেন।
গতকাল বুধবার খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৮০ টাকা কেজি, ভারতীয় ছোলা ৮১–৮২ টাকা, মসুর ডাল ৮৯ টাকা, খেসারি ডাল ৭২ টাকা, মটর ডাল ৫৯ টাকা, সাদা মটর ৫৬ টাকা, মুগ ডাল ৮১ টাকা, সয়াবিন তেল প্রতি মণ (৩৭.৩২
কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৫০ টাকায়। অন্যদিকে পাম তেল প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬৪০ টাকা, ভালো মানের ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, রসুন ১১৫ টাকা এবং চীনা আদা কেজিপ্রতি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে চিনি ১১২ টাকা, চিড়া ১ হাজার ৩০০ টাকা ও লাল সেমাই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৭ টাকায়।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, রমজানকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা গত তিন চার মাস আগে পণ্য আমদানির জন্য এলসি (ঋণপত্র) খুলেন। ইতোমধ্যে পণ্যের চালান গুদামে এসে পৌঁছেছে। আমাদের দেশে প্রতি বছর
ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ছে। আবার তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমদানির পরিমাণও বাড়ছে। বাজারে রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে ছোলা, মটর ডাল, মশুর ডাল, খেসারি ডাল এবং চিনির কোনো ঘাটতি নেই। উল্টো বাজারে এখন যে পরিমাণ পণ্য আছে, সে পরিমাণ বেচাবিক্রি নাই। সামনের দিনগুলোতে দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নাই।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে। সরকারের কোনো সংস্থা অভিযান চালাতে গেলেও তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়।
কোনো পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ১ ডলার বাড়লেও সাথে সাথে তারা দাম বাড়িয়ে দেন। অথচ যেসব পণ্যের দাম তারা বাড়িয়ে দেন সেগুলো কিন্তু আগে আমদানি করা। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের বুকিং রেট কমে গেলে তখন কিন্তু তারা পাইকারি বাজারে দাম কমিয়ে দেয় না। আগামী শুক্রবার
থেকে রমজান শুরু হচ্ছে। এই রমজান মাসে ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি মুনাফা করেন। তাই প্রশাসনকে অবশ্যই প্রতিদিন বাজার মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে। কারণ ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে দাম উঠানামা করেন।