কোনো মানুষ থাকবে না ঠিকানাবিহীন : প্রধানমন্ত্রী

আজাদী ডেস্ক

আরও ৩৯ হাজার ৩৬৫ গৃহহীন পেলেন সেমিপাকা ঘর রাউজান-বোয়ালখালীসহ ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা | বৃহস্পতিবার , ২৩ মার্চ, ২০২৩ at ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীনদের আবাসন নিশ্চিত করার সরকারি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পবিত্র ঈদউলফিতরের আগে গৃহহীনদের আরও ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তর করেছেন। এরমধ্যে চট্টগ্রাম জেলার রয়েছে ১ হাজার ৫২টি। গতকাল বুধবার তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আশ্রয়ণ২ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপে এসব বাড়ি হস্তান্তর করেন তিনি। এসময় চট্টগ্রামের রাউজানবোয়ালখালীসহ ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীনভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী।

 

এর আগে প্রথম ধাপে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৩৩০টি এবং তৃতীয় ধাপে ৫৯ হাজার ১৩৩টি ঘর বিতরণ করা হয়েছে। আশ্রয়ণ২ প্রকল্পের আওতায় আরও ৩৯ হাজার ৩৬৫টি বাড়ি বিতরণের ফলে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,১৫,৮২৭টি। প্রধানমন্ত্রী সাতটি জেলা এবং

১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এর ফলে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত জেলার মোট সংখ্যা ৯টি এবং উপজেলার সংখ্যা ২১১টি। এর আগে তিনি পঞ্চগড় ও মাগুরাকে গৃহহীনভূমিহীনমুক্ত জেলা ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাড়ির প্রাপকদের পরিবর্তিত জীবনধারার উপর একটি ভিডিওপ্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নোয়াগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প

এবং বরিশালের বানারীপাড়ার উত্তরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এসময় তিনি বলেন, আমি আরও সাতটি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেছি। ভূমিহীনদের ঘর দেওয়ার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। তিনি বলেন, জাতির পিতা দেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত করে বাংলাদেশের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে একটি উন্নত ও

মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে চেয়েছিলেন। যার জন্য তার সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকার প্রধান কোনো জেলায় কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন রয়েছে কিনা তা জানতে তালিকা তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই প্রতিটি মানুষ বাড়ি, আশ্রয় এবং জীবিকার সুযোগ পাবে। তারা আর সমাজের বোঝা হয়ে থাকবে না। আমরা চাই প্রত্যেকে নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং যথাযথ সম্মানের সাথে বসবাস করবে। কোনো মানুষ থাকবে না ঠিকানা বিহীন। প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর

রহমানের বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না বলে তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেন। বঙ্গবন্ধুর পদচিহ্ন অনুসরণ করে তিনি বলেন, তার সরকার ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বাড়িঘর ও জমির মালিকানা দেওয়ার উদ্যোগ নেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তারা সর্বদা জনগণের কল্যাণে কাজ করে এবং জনগণ এর সুফল পায়। তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকলেও এসময় সবার আগে তারাই জনগণের

পাশে ছিল। তিনি বলেন, আমরা প্রথমে ঘূর্ণিঝড় কবলিত মানুষের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু তৎকালীন সরকার প্রধান ঘুমিয়ে ছিলেন এবং তিনি কিছুই জানতেন না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিতে কঙবাজার শহরের উপকণ্ঠে ‘খুরুশকুল আশ্রয়ণ পরিকল্পনা’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ

করেছে। এখানে যাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল, তারা বেশিরভাগই ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের শিকার। তিনি আরো বলেন, ঐ সময় প্রায় ৪ হাজার জলবায়ু উদ্বাস্তু অনেকগুলো পাঁচ তলা বাড়ির ফ্ল্যাটে আশ্রয় নিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু ও পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল তাদেরকেও সরকার বাড়ি দিয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, কেউ ঠিকানা ছাড়া থাকবে না। আমরা তাদের শুধু ঘরই দিইনি, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। তাদের জীবিকার জন্য ঋণও দিয়েছি। তারা এখন দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা ঘোষণা করেছিলেন যে, একজন ব্যক্তি ১০০ বিঘা জমির অধিকারী হতে পারবে এবং এর অতিরিক্ত পরিমাণ জমি কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাতুনগঞ্জে পাঁচ আড়তকে ২৭ হাজার টাকা জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধপাইকারি বাজারে পর্যাপ্ত মজুদ