পাইকারিতে ফের বেড়েছে চিনির দাম

কারসাজির অভিযোগ ভোক্তাদের, অভিযানের দাবি

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ৮ জুন, ২০২৩ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

পাইকারি ফের বেড়েছে চিনির দাম। খাতুনগঞ্জে গত দুদিনের ব্যবধানে প্রতি মণে (৩৭.২৩৭ কেজি) চিনির দাম বেড়েছে ৭০ টাকা। বতর্মানে পাইকারি পর্যায়ে কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ১২২ টাকা। আবার খুচরা বাজারে সেই চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চিনির সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বাড়ার কারণে দাম বাড়ছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, চিনির বাজারে প্রশাসনের কোনো ধরনের নজরদারি নেই। যার ফলে ব্যবসায়ীরা কিছুদিন পর পর ইচ্ছেমতো দাম বাড়ান।

খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে গতকাল বুধবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারীতে প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫৪০ টাকা। গত দুই দিন আগে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৪৭০ টাকায়। অন্যদিকে কাজীর দেউড়ির খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের পাইকারী ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়। বর্তমানে চট্টগ্রামে একটি শিল্পগ্রুপ বাজারে প্রচুর পরিমাণে ডিও বিক্রি করেছেন। কিন্তু অনেকে ডিও’র চিনি নিতে পারছেন না। কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই সপ্তাহ আগে প্রতি মণ চিনির ডিও ছিল ৩ হাজার ৫০০ টাকা, কিন্তু বর্তমানে দাম বাড়ার কারণে ওই দরের পণ্য ডেলিভারি দিচ্ছেন কোম্পানিগুলো।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে চিনির সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। আবার চাহিদা বেড়ে গেছে। তাই দামও বাড়ছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, চিনির বাজার নিয়ে কারসাজির ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে প্রশাসনের যেভাবে নজরদারি হওয়ার হওয়ার তো সেভাবে হচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করার সুযোগ পাচ্ছেন। আসলে আমাদের দেশে গুটিকয়েক চিনি আমদানিকারক আছে। তারা নির্দিষ্ট কিছু ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে চিনি বিক্রি করেন। এভাবে চিনির বাজারটা পুরোপুরি তাদের দখলে চলে যায়। বর্তমান বাজারে সরকারি চিনিকলগুলোর চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া সরকারি চিনিকলগুলোর বিপণন অব্যবস্থাপনার কারণে বেসরকারি চিনির আমদানিকারকরা কারসাজি করার সুযোগ পাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধআড়াই বছরের শিশুটি এখন কাতরাচ্ছে হাসপাতালে