পর্যটকবান্ধব কক্সবাজার নগরীর প্রত্যাশা

রতন কুমার তুরী | বুধবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

শীত মৌসুমে অস্বাভাবিকভাবেই কক্সবাজার নগরিতে পর্যটকদের ভীড় বেড়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে শীত মৌসুমে দেশের ভ্রমণ পিপাসুরা পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতটি দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বিধায় এরি ফাঁকে কক্সবাজার নগরিতে অবস্থিত আবাসিক হোটেল, খাবার হোটেল এবং পর্যটকদের কেনার সামগ্রীসহ সবকিছুর মূল্য স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দেয়। অনেক সময় আবাসন সুবিধার অভাবে পর্যটকরা রাস্তায় কিংবা সমুদ্র সৈকতে রাত কাটাতে বাধ্য হয়। বর্তমানে কক্সবাজারে এক ব্যাপক সংখ্যক পর্যটক অবস্থান করছে এদের অনেকেই আবাসিক হোটেলে রুম ভাড়া পায়নি ফলে এরা খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করছে বলে পত্রিকাগুলোতে খবর বেরিয়েছে এর বাইরে বর্তমানে কক্সবাজারে খাদ্য দ্রব্যের মূল্য একেবারে আকাশ ছোঁয়া বলে পর্যটকরা অভিযোগ করছে। এধরনের একটি পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকরা হয়রানির শিকার হবে এটা কারো কাম্য হতে পারে না। যেহেতু কক্সবাজার হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন নগরী এখানে সবকিছুর দাম একটু বেশি হবেই কিন্তু সেটা যাতে মাত্রা ছাড়িয়ে না যায় তা প্রশাসনকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। আর কোনো পর্যটক যদি আবাসন সুবিধা না পায় কিংবা রাতে কক্সবাজারের কোনো জায়গায় হোটেল না পায় তাহলে জেলা প্রশাসন নিজ উদ্যোগে এদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারেন। কারণ এমনও হতে পারে এসব পর্যটকদের মধ্যে নারী, শিশু কিংবা বিদেশিও রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কক্সবাজারকে পর্যটক বান্ধব করতে হলে উক্ত এলাকার প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণদেরও এগিয়ে আসতে হবে। পর্যটকদের নিকট থেকে যে কোনো জিনিষের মূল্যে সহনীয় মাত্রা নেয়াসহ এদের দেখভাল করার কর্তব্য স্থানীয় জনগণদের পালন করতে হবে। হঠাৎ করে কোনো পর্যটক বিপদে পড়লে তাকে আন্তরিকভাবে সাহায্য করা স্থানীয় জনগণদের কর্তব্য হিসেবে ধরে নিতে হবে। মূলত কক্সবাজারে সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে ফলে স্থানীয় জনগণ এথেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান এবং লাভের ভাগ সরাসরি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গিয়েও যোগ হচ্ছে ফলে কক্সবাজার তথা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে কীভাবে পর্যটন বান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তোলা যায় তা স্থানীয় জনগণসহ প্রশাসনকে ভাবতে হবে। প্রকৃতপক্ষে প্রতি শীত মৌসুমেই শোনা যায় কক্সবাজারে সবকিছুর দাম বেশি নেয়া হচ্ছে এবং পর্যটকদের মধ্যে অনেককেই শুধুমাত্র বেশি অর্থ খরচ হওয়ার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ফিরে আসতে হচ্ছে। অনেক মধ্যবিত্ত শীতের সময় কক্সবাজারে যাওয়ার মনস্থ করলেও সেখানে জিনিষপত্র এবং থাকা খাওয়ার দাম মাত্রারিক্ত হওয়ার কারণে যাওয়ার সাহস করে না, এমতাবস্থায় শীত মৌসুমে কক্সবাজারে যাতে অযথা দ্রব্যের মূল্য বাড়ানো নাহয় সেবিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে। এতে করে একেবারে উচ্চবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্তরা শীত মৌসুমে কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ পাবে। মোট কথা হচ্ছে সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন পৃথিবীর বৃহত্তর সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকাকে যে কোনো মূল্যে পর্যটক বান্ধব হিসেবে গড়ে তোলবেন এবং প্রত্যাশা সকলের।
লেখক : প্রাবন্ধিক, শিক্ষক

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণ দ্রুত বাস্তবায়ন হোক
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষার মৌলিক অধিকার সকল শিশুর জন্য নিশ্চিত করা হোক