রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের সোনারগাঁও এলাকায় সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে চলছে চারটি ইটভাটা। এসব ইটভাটায় মাটির জোগান দিতে দীর্ঘদিন ধরে আশপাশের ফসলি জমির টপসয়েল ২০–৩০ ফুট গভীর করে কাটা হচ্ছে। এতে ফসলি জমির পাশের শতাধিক বসতঘর ধসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
এছাড়া দুটি খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। শত শত একর ফসলি জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইটভাটা গুলোর ৫ শতাধিক শ্রমিকের জন্য নির্মিত খোলা পায়খানার দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে কয়েক কিলোমিটার অদূরে। ইটভাটার মেশিনের বিকট শব্দে রাতে ঘুমাতে পারছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। প্রশাসনের কাছে বেশ কয়েক বছর ধরে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে আসলেও ইটভাটাগুলোর পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। প্রতিকার পেতে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শুক্রবার রাঙ্গুনিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা। স্থানীয় আব্দুল কুদ্দুস, মনির আহমদ ও আবদুল গফুর নামে তিন ব্যক্তি জানান, আমাদের বাড়ি সংলগ্ন এমবিএম, এএমবি–১ ও এএমবি–২ এবং এসএবি নামে চারটা ইট ভাটা রয়েছে। এই ইটভাটাগুলো স্থাপিত হওয়ার কারণে প্রথম দফা ২০ ফুট গভীরে মাটি কাটা হয়েছিল। পরবর্তীতে দফায় দফায় ৩০–৪০ ফুট গভীর করে মাটি কাটা শুরু করে দিয়েছে ভূমিদস্যুরা। বৃষ্টিপাত বা বন্যা শুরু হলে আমাদের এলাকার ৩০০ বসত বাড়ি বিলীন হয়ে যাবে এবং ঘরবাড়ি রক্ষা করা কিছুতেই সম্ভব হবে না। এছাড়াও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, ফসলাদি খাদ্যশষ্য উৎপাদন মারাত্মক হুমকির মাঝে পড়ে গেছে।
স্থানীয় শাহ আলম ও উকিল আহমদ জানান, সমপ্রতি এলাকার পশ্চিমবিলের ফসলি জমিতে ৩০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে পুকুর বানিয়ে ফেলেছে। এতে এসব জমির পাশে থাকা অন্তত ৫০টি বসতঘরের ভিটেমাটি ধসে পড়া শুরু করেছে। যেকোনো সময় বসতবাড়িও ভেঙে পড়ে প্রাণহানির আশংকা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ইটভাটা মালিক মো. ইউনুস কোম্পানি দেখা করে বক্তব্য দেবেন বলে ফোন কেটে দেন। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গনি ওসমানী বলেন, স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা নিতে থানার ওসিকে দেখতে বলা হয়েছে। তবে ইটভাটাগুলোর বিষয়ে স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ নেয়া হবে। রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মো. মাহবুব মিলকী বলেন, এলাকার মানুষ লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ পাঠিয়ে ফসলি জমির মাটিকাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।