পবিত্র রমজান শুরু

করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় নেই বিধিনিষেধ।। দুই বছর পর স্বাভাবিক সবকিছু

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৩ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের পয়গাম নিয়ে এসেছে রমজান। ইসলামের মূল পাঁচ ভিত্তির অন্যতম হলো মাহে রমজানের রোজা পালন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দেশের আকাশে হিজরি ১৪৪৩ সনের রমজান মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় আজ রোববার প্রথম রোজা পালন করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এর আগে গত রাতে এশার নামাজের পর তারাবির নামাজ আদায় এবং ভোর রাতে সেহেরি খেয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির এক সভা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) আয়োজিত এ সভায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী চাঁদ দেখার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।
মুসলমানদের আকাঙ্ক্ষিত মাস রমজান। পবিত্র কোরান নাজিল হয়েছিল এ মাসে। সূর্যোদয়ের আগে থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকেন রোজাদাররা। মধ্যরাতে সেহেরি খাওয়ার পর সূর্য ডোবার সময় ইফতার করবেন তারা। এদিকে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
ইসলামের সূচনাকাল থেকেই রমজান নিয়ে উচ্ছ্বাস রয়েছে মুসলমানদের মধ্যে। তবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় গত দুই বছর সিয়াম সাধনার মাসটি কিছুটা অন্যভাবে পালন করতে হয়েছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের। ২০২০ ও ২০২১ সালে রমজান মাসের চিরায়ত ঐতিহ্য ইফতার মহফিল এবং মসজিদে খতমে তারাবি আদায় নিয়ে কিছু বিধিনিষেধ ছিল। এবার করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। ফলে আগের মতোই স্বতস্ফূর্তভাবে তারাবির নামাজে অংশ নিয়েছেন মুসল্লিরা। খতমে তারাবি আদায়ে মসজিদে ঢল নামে মুসল্লিদের।
অবশ্য এবার পবিত্র রমজান মাসে দেশের সকল মসজিদে একই পদ্ধতি অনুসরণ করে খতম তারাবি পড়ানোর জন্য ইফার পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। গত ৩০ মার্চ ইফার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রমজানের প্রথম ৬ দিনে দেড় পারা করে ৯ পারা এবং পরের ২১ দিনে এক পারা করে ২১ পারা কোরান খতমের পরামর্শ দিয়েছে ইফা। এতে ২৭ রমজান পবিত্র শবে কদরের রাতের তারাবিতে কোরআন খতম সম্ভব হবে। এ পদ্ধতি অনুসরণ করলে রমজানে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী মুসলিমদের কোরআন খতমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করে ইফা।
এ বিষয়ে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইদ্রিস আজাদীকে বলেন, রমজান মাসে দেশের প্রায় সব মসজিদে খতমে তারাবি নামাজে পবিত্র কোরআনের নির্দিষ্ট সংখ্যক পারা পড়ার রেওয়াজ আছে। তবে কোনো কোনো মসজিদে এর ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় এবং এতে রমজানে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী মুসলিমদের কোরআন খতমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয় না। সেজন্য একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন অনুরোধ জানিয়েছে। সেটা মানলে সবার জন্য ভালো হতো।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরে অনেক জায়গায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। এতে প্রশাসন কড়া নজর দিলে ভালো হতো। তবে আমরা বাধ্যও করতে পারি না। কেবল অনুরোধ করতে পারি।
গত দুইবারের বিধিনিষেধ না থাকায় এবার রমজানে স্বাভাবিকতা ফিরে আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন, এবার করোনা শনাক্তের হার আগের চেয়ে কমেছে। বিগত সময়ে মক্কা ও মদিনায় নানা বিধিনিষেধ ছিল। এবার নাই। সেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে না। দেশেও শনাক্তের হার কমায় তারাবি ও ইফতার নিয়ে কোনো বিধিনিষেধ আমরা পাইনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাহে রমজানের সওগাত
পরবর্তী নিবন্ধআমি চোর বাটপারদের সভাপতি নই : এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট