নৌকার প্রার্থী কেন জামানত হারালেন

চকরিয়ার চিরিঙ্গা ও কৈয়ারবিল

চকরিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

চতুর্থ ধাপে গত রোববার অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহনেওয়াজ রুমেল পেয়েছেন মাত্র ৬৭ ভোট। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী জামানত হারানোর মতো ভোট পাওয়া নিয়ে চলছে আলোচনা। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব কেউ কেউ। কেন এত কম ভোট পেলেন তিনি?
এর আগে তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর উপজেলার কৈয়ারবিল ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী জন্নাতুল বকেয়া রেখাও জামানত হারিয়েছেন। তিনি পেয়েছিলেন ৯৯ ভোট। চিরিঙ্গা ও কৈয়ারবিলে নৌকার প্রার্থীর জামানত হারানোর মতো ভোট পাওয়া নিয়ে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলছেন, এই দুই ইউনিয়নে যাদেরকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছিল এলাকায় তারা পরিচিত না। নতুন প্রজন্মও তাদেরকে ভালোভাবে চেনে না। এমনকি ভোটের মাঠে এই দুই প্রার্থীর তেমন প্রচারণাও ছিল না।
তারা বলেন, দুই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। জেলা আওয়ামী
লীগও সম্ভাব্য তিনজন প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর সময় তাদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেননি। তাছাড়া কেন্দ্র থেকে চূড়ান্তভাবে চিরিঙ্গা ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নে নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী তথা দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর পরই বিদ্রোহ দেখা দেয়। এতে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেন।
চিরিঙ্গা ইউনিয়নে জামানত হারানো নৌকার প্রার্থী শাহনেওয়াজ রুমেলকে দলের মনোনয়ন দেওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুই বিদ্রোহী প্রার্থী চিরিঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল হোসেন চৌধুরী ও উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনের পক্ষে অবস্থান নেন। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। শেষ পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগ দুই বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে এবং চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠায়। এই অবস্থায় রোববারের নির্বাচনে দেখা গেছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে। সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি (বহিষ্কৃত) জামাল হোসেন চৌধুরী ৩৬৫৫ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিজিত অপর বিদ্রোহী প্রার্থী কৃষকলীগ সভাপতি জসীম উদ্দিন পেয়েছেন ২৫৬৭ ভোট।
২৮ নভেম্বর হওয়া কৈয়ারবিল ইউনিয়নে নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী জন্নাতুল বকেয়া রেখার পক্ষেও মাঠে ছিলেন না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। চিরিঙ্গার মতো এখানেও স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী আফজাল হোসেন চৌধুরী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগ নেতা মক্কী ইকবাল হোসেনের (নির্বাচিত) পক্ষে অবস্থান নেন। পরে দল থেকে বহিষ্কার হন বিদ্রোহী প্রার্থী আফজল চৌধুরী।
চিরিঙ্গা ইউপিতে জামানত হারানো নৌকার প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহনেওয়াজ রুমেল আজাদীকে বলেন, দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হলেও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হন বিদ্রোহী প্রার্থী। এমনকি উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিনও নৌকার বিদ্রোহী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে স্থানীয় নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেয়ায় নৌকায় ভোট পড়েছে মাত্র ৬৭টি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ায় পাঁচ কেন্দ্রে পুনঃনির্বাচন দাবি
পরবর্তী নিবন্ধ‘টেকনিক্যাল বিষয় বুঝতে সময় লাগবে’