নেপালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত ৬৮

| সোমবার , ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৭:৪৪ পূর্বাহ্ণ

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাওয়ার পথে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ৬৮ জন নিহত হয়েছে। আরো চারজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন নেপাল বিমানবন্দরের একজন মুখপাত্র। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট উড়োজাহাজ এটিআর ৭২-৫০০ পর্যটন নগরী পোখরায় অবতরণের চেষ্টার সময় বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজটি ১৫ বছরের পুরনো।
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র সুদর্শন বার্তাউলা বলেছেন, ওই ফ্লাইটের ৭২ আরোহীর মধ্যে ৬৮ জন যাত্রী, বাকিরা ক্রু। যাত্রীদের মধ্যে ১৫ জন ছিলেন বিদেশি নাগরিক। তাদের পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রুশ, দুজন দক্ষিণ কোরীয় এবং আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার একজন করে ছিলেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে হাসপাতালে নেওয়ার কথা জানালেও তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। খবর বিডিনিউজের।
তিন দশকের মধ্যে এটাই নেপালে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা। এরআগে ১৯৯২ সালে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের এয়ারবাস এ৩০০ কাঠমান্ডু যাওয়ার সময় পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়ে ১৬৭ আরোহীর সবাই মারা গিয়েছিলেন। আর ২০১৮ সালের ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার সময় বাংলাদেশের বেসরকারি ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে ৫১ জন প্রাণ হারায়।
কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, রোববার সকালে কাসকি জেলার পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পুরনো বিমানবন্দরের মাঝামাঝি এলাকায় দুই ইঞ্জিনের এটিআর ৭২ উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনায় পড়ে। হিমালয় কোলের দেশ নেপালের পশ্চিমাঞ্চলীয় পোখারা এলাকা জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। কাঠমাণ্ডু থেকে অনেক পর্যটক আকাশপথে সেখানে যান নিয়মিত। স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ছোট একটি উড়োজাহাজ অবতরণের সময় হঠাৎ কাত হয়ে সরাসরি মাটির দিকে নেমে আসতে থাকে। বিবিসি জানিয়েছে, পোখারায় নামার সময় উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ছবি ও ভিডিওতে পাহাড়ি এলাকায় বিমানের জ্বলন্ত ধ্বংসস্তূপের কাছে আগুন নেভাতে দেখা যায় উদ্ধারকর্মীদের । দূর থেকেও কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায় ওই এলাকায়। এই দুর্ঘটনার পর ইয়েতি এয়ারলাইন্স আজ ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের সব নিয়মিত ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করেছে বলে জানায় দ্য ইকোনোমিক টাইমস।
কাসকি জেলার পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পুরনো বিমানবন্দরের মাঝামাঝি এলাকায় উড়োজাহাজটি যখন বিধ্বস্ত হয় তখন আকাশ একদম পরিষ্কার এবং রোদ ঝলমলে ছিল। কী কারণে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। ঘটনা খতিয়ে দেখতে নেপাল সরকার পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করেছে এবং আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
হিমালয় কন্যা নেপালে আবহাওয়া খুব ঘন ঘন বদলায়। সে কারণে প্রায়ই সেখানে বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। ২০০০ সালের পর থেকে বিমান ও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা মিলিয়ে দেশটিতে অন্তত ৩০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যে সংখ্যায় গতকাল নতুন করে যোগ হলো আরো ৬৮ জন। বাকি চারজনও হয়তো একই ভাগ্য বরণ করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে নতুন ভোটার সাড়ে ৫ লাখ
পরবর্তী নিবন্ধরাত ১০টার মধ্যে মাইকের ব্যবহার বন্ধের দাবি