জীবনের তাগিদে আমাদের দ্বিগ–বিধিক ছুটে চলতে হয়। চলার প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিয়ম মানা আবশ্যক তা না হলে যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ও হ্যাঁ, বাস কিংবা ট্রাকের পিছনে অথবা রাস্তার পাশে বড় কোন বিলবোর্ডে লেখা ‘একটি দুর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না’। এই লেখাটাকে যদি মনোনিবেশ করে পথচলি তাহলে তো দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভবনা কমে যেত। কিন্তু তা করছি কই? বরং রাস্তায় চলার পথে কে কার আগে গন্তব্যে পৌঁছাবে সেটিই হয়ে উঠে মুখ্য বিষয়। তখন “সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি” এই প্রবাদ বাক্যগুলো আমাদের মাঝ হতে লোপ পেতে শুরু করে। যদি তাই হতো বছরের পর সড়ক, নৌ, রেলপথে একের পর এক দুর্ঘটনা, যেখানে মুহূর্তেই তরতাজা প্রাণ নিমিষেই নিভে যায় কয়েক সেকেন্ডে। দিশেহারা হয়ে যায় হাজার হাজার পরিবার। এখানে থামা নিষেধ, গাড়ীর গতি নিয়ন্ত্রণে রাখুন, বামে/ডানে ঝুকিপূর্ণ বাঁক রাস্তায় চলার পথে এই ধরণের অনেকগুলো নির্দেশনা দেখা যায়, যা মেনে চলাটা আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু তা না করে এই নির্দেশনাগুলো নিছক সাইনবোর্ডে সাজানো থাকলেই যেন ভালো লাগে আমাদের কিন্তু অন্যদিকে এইসব নির্দেশনা না মানায় কত পরিবার যে তাদের আপনজনকে হারিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই যে গত বছর যেখানে করোনার কারণে বেশিরভাগ সময়তেই জরুরি যানবহন ছাড়া সকল যানবাহন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার যেখানে আহতের সংখ্যা ৭ হাজারেরও বেশি। যা বিগত বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ দুর্ঘটনা বেশি ও মৃত্যুর হার ১৭ শতাংশ। যার বেশিরভাগই বেপোরোয়া গতির কারণে। এই দুর্ঘটনার ফলে একদিকে যেমন পরিবারগুলো তাদের আপনজনদের হারাচ্ছে অন্যদিকে এই দেশের জিডিপিতেও এর প্রভাব পড়ছে গুরুতর যার ফলে হাজার হাজার কর্মঘণ্টা অপচয় হচ্ছে, মেধাবী কর্মক্ষম কর্মী হারাচ্ছে এই দেশ। আসুন, চলার পথে সাইনবোর্ডে ঝুলানো নির্দেশনাগুলো মানার চেষ্টা করি, আজ না হোক অন্তত কাল হলেও এসব অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে।
লেখক : শিক্ষার্থী