নিম্নচাপ থেকে আজ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে ইয়াস

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৪ মে, ২০২১ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ থেকে আজ সোমবার ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ পরিণত হতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমেদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ বর্তমানে যে অবস্থানে রয়েছে, সেখান থেকে উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হতে থাকলে বাংলাদেশের সুন্দরবনের নীচে পশ্চিমবঙ্গের দীঘা অঞ্চল দিয়ে এটি বয়ে যেতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের সমস্ত উপকূলে এর প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী,বরগুনা, পিরোজপুর এলাকায় বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে জানান এ আবহাওয়াবিদ।
এদিকে গতকাল রোববার বিকেল থেকে চট্টগ্রামের আকাশে মেঘ জমতে শুরু করে। রাত ১০টার দিকে নগরীসহ জেলার কিছু কিছু এলাকায় বাতাসের সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। এতে দিনভর তাপদাহে অতিষ্ঠ লোকজনের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে। গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঘূর্ণিঝড় সতর্কবার্তা বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (নং-০৩) বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়। এটি রোববার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৫৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৪০ কি.মি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটে সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদে আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস রোববার সন্ধ্যা ৬টার স্থানীয় পূর্বাভাসে বলা হয়, পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামের আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। সেই সাথে কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা কিংবা ঝড়ো বাতাসের সাথে বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘন্টায় ১০-১৮ কি.মি. বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। গতকাল রোববার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪.১ ডিগ্রি বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২.৩ ডিগ্রি বেশি।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া ও ভূ-প্রাকৃতিক কেন্দ্রের উপ-পরিচালক সৈয়দ আবুল হাসানাৎ দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘এটি বর্তমানে নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। সোমবারের (আজ) যেকোন সময়ে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তখন এটির নাম হবে ইয়াস। এটি বর্তমান অবস্থান থেকে দেশের উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারত ফেরতদের নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তা
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে শিশুর মৃত্যু