নিত্য নতুন কৌশলে আসছে মিথ্যা ঘোষণার পণ্য চালান

অসাধু কাস্টমস কর্তাদের যোগসাজসে খালাসের অভিযোগ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৪ আগস্ট, ২০২২ at ৭:০২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে থেমে নেই মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ঠেকাতে শুল্ক ফাঁকির দ্বিগুণ জরিমানার বিধান রাখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তারপরেও একশ্রেণীর অসাধু আমদানিকারক জালিয়াতির নিত্য নতুন পন্থা আবিস্কার করে দিব্যি পণ্য চালান খালাস করে নিয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে, মিথ্যা ঘোষণায় আসা আমদানি পণ্য খালাসে সহায়তা করে থাকে কিছু অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তা। মাঝে মাঝে কিছু চালান আটক হয়, কিন্তু তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পণ্য চালান বন্দর থেকে খালাস হয়ে যায়।

সম্প্রতি জালিয়াতির মাধ্যমে আমদানিকৃত পাঁচটি মদের চালানের মধ্যে দুটি চালানই বন্দর থেকে খালাস হয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে মদভর্তি দুটি কন্টেনার আটক করে র‌্যাব। পরবর্তীতে বন্দররের অভ্যন্তর থেকে আরো তিনটি মদের কন্টেনার আটক করা হয়। দেখা গেছে, কুমিল্লা ইপিজেড, ঈশ্বরদী ইপিজেড, নীলফামারি উত্তরা ইপিজেড এবং বাগেরহাটের মোংলা ইপিজেডের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নামে ৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকার ৭৮ হাজার ৩২১ লিটার মদ নিয়ে আসে আমদানিকারকরা। গার্মেন্টসের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির ঘোষণায় মদ আমদানির মাধ্যমে আমদানিকারকরা মোট ৫৭ কোটি ৮৩ লাখ রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করেছে বলে জানায় চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তারা।

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, মদের চালান আটক হওয়ায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নজরদারি জোরদার করে। নজরদারি অংশ হিসেবে ১৫০ চালানকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে কাস্টমসের অ্যাসাইকুডা সিস্টেমে লক করে। তবে কাস্টমসের সেবাগ্রহীতারা বলছেন, পণ্য চালান আমদানি হওয়ার পর দীর্ঘ সময় বিল অব এন্ট্রি দাখিল না করা প্রতিষ্ঠানগুলোই জালিয়াতির সাথে যুক্ত থাকে। অসাধু আমদানিকারকরা মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য এনে সুযোগ অপেক্ষায় থাকে অথবা কাস্টমস কর্তাদের ম্যানেজ করার অপেক্ষায় থাকে। এক সময় তারা সুযোগ বুঝে চালান খালাস করে নিয়ে যান। অথচ চট্টগ্রাম কাস্টমসের আইনে আছে পণ্য চালান আমদানি হওয়ার ৪৫ দিন পেরিয়ে তা নিলাতে তুলতে হবে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে বছরের বছর পড়ে থাকে অনেক কন্টেনার। নিয়ম মেনে পণ্য নিলামে তোলা হলেও জালিয়াতি ঘটনা কমে যাবে বলছেন তারা।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ শাখার (এআইআর) উপ-কমিশনার মো. সাইফুল হক বলেন, মিথ্যা ঘোষণা পণ্য আমদানি রোধে চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর টিম সব সময় সতর্ক রয়েছে। এছাড়া আমরা শুল্ক ফাঁকির দ্বিগুণ জরিমানা করছি। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মদের চালান আমদানি হওয়ায় আমরা ইতোমধ্যে আমদানিকারক ও সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় ফৌজদারি মামলাও দায়ের করছি। এছাড়া কাস্টমসের নিজস্ব এন্টি মানি লন্ডারিং শাখাতে এসব চালানের নথি পাঠানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএসিল্যান্ডকে ঘুষের প্রস্তাব
পরবর্তী নিবন্ধরেড ক্রিসেন্টের মানবিক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী