নিজেদের মাঠে হার দিয়ে শুরু চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২৯ জানুয়ারি, ২০২২ at ৭:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বিপিএলের এবারের আসরের ঢাকা পর্বে তিন ম্যাচের দুটিতেই জিতেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। পরের পর্বে নিজেদের মাঠে আরো ভাল কিছু করার প্রত্যয় ছিল চট্টগ্রামের। কিন্তু নিজেদের মাঠে শুরুটা মোটেও ভালো হল না চট্টগ্রামের। ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে রান উঠেনি মোটেও। চট্টগ্রামে সে রান খরা কাটার একটা আভাসও মিলেছে। কিন্তু আসল কাজটা করতে পারল না চট্টগ্রাম। হার দিয়ে নিজেদের মাঠের বিপিএল পর্ব শুরু করতে হলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে। স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানরা না পারলেও খুলনার ব্যাটসম্যানরা দারুণভাবে উইকেটের ফায়দাটা লুফে নিয়েছে। আর সে সুবাধে ৬ উইকেটের জয় নিয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শুরু করেছে মুশফিকের খুলনা। আর চট্টগ্রামের শুরুটা হলো হার দিয়ে। থিসারা পেরেরার নেতৃত্বে খুলনার বোলারদের দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পর মুশফিক এবং আন্দ্রে ফ্লেচারের দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং খুলনা তুলে নিয়েছে দারুণ এক জয়। আর চট্টগ্রামকে বরণ করতে হলো হতাশার পরাজয়। ঢাকায় দুই ম্যাচের একটিতে জয় একটিতে পরাজয় নিয়ে চট্টগ্রাম এসেছিল খুলনা টাইগার্স। আর চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচেই তুলে নিল আরেকটি জয়। ফলে তিন ম্যাচে খুলনার জয় এখন দুটি। আর চট্টগ্রামের চার ম্যাচে দুটি। যদিও এই মাঠে আরো তিনটি ম্যাচ খেলবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায়। ইনিংসের দ্বিতীয় এবং নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই নাবিল সামাদ তুলে নেন ক্যানার লুইসের উইকেট। ১ রান করে ফিরেন এই ক্যারিবিয়ান। দ্বিতীয় উইকেটে আফিফ এবং উইল জেকস মিলে ৫৭ রান যোগ করেছিলেন। কিন্তু এই জুটি ভাঙতেই ধ্বস নামে চট্টগ্রামের ইনিংসে। ২৩ বলে ২৮ রান করা জেকসকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন থিসারা পেরেরা। এরপর সাব্বির, মেহেদী হাসান মিরাজ এবং বেনি হাওয়েল দ্রুত ফিরলে চাপে পড়ে চট্টগ্রাম। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে এগিয়ে

যাচ্ছিলেন আফিফ হোসেন। দলকে ৯৭ রানে পৌঁছে দিয়ে ফিরেন আফিফ নিজের হাফ সেঞ্চুরি থেকে ৬ রান দুরে থাকতে ফিরেন এই বাঁহাতি। তার ৩৭ বলে ৪৪ রানের ইনিংসটিতে ৩টি চার এবং ২টি ছক্কার মার ছিল। শামীম পাটেয়ারী এবং রেজাউর রহমান রাজাও ব্যর্থ হলেন দলের হাল ধরতে। তবে অভিজ্ঞ নাইম ইসলাম এগিয়ে যাচ্ছিলেন দ্রুত গতিতে। তাকে কিছুটা সঙ্গ দিয়েছেন শরীফুল ইসলাম। শেষ দিকে ১৪ বলে ২৭ রান যোগ করেন দু’জনে। আর তাতে চট্টগ্রামের ইনিংস থামে ১৪৩ রানে। নাইম ১৯ বলে ২৫ রানে আর শরীফুল ৬ বলে ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন। খুলনা টাইগার্সের পক্ষে ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন থিসারা পেরেরা। এছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন বাকি পাঁচ বোলারের সবাই।

১৪৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চট্টগ্রামের মত দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই উইকেট হারায় খুলনা। সৌম্য সরকারকে ফিরিয়ে খুলনা শিবিরে প্রথম ধাক্কাটা দেন শরীফুল। দ্বিতীয় উইকেটে আন্দ্রে ফ্লেচার এবং রনি তালুকদার মিলে যোগ করেন ৫০ রান। দারুন খেলতে থাকা রনি তালুকদারকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙ্গেন নাসুম আহমেদ। ১৮ বলে ১৭ রান করা রনি ফিরেন উইল জেকসের চমৎকার এক ক্যাচে পরিণত হয়ে। এরপর মুশফিককে নিয়ে আবারো এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ফ্লেচারের। নিজের হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন এই ক্যারিবিয়ান। শেষ পর্যন্ত তাকে থামান চট্টগ্রামের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ৪৭ বলে ৫৮ রান করা ফ্লেচারও ফিরেন জেকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে। তার ইনিংসে ৬টি চার এবং ২টি ছক্কার মার ছিল। এরপর সেকুগে প্রসান্নাকে নিয়ে দলকে একেবারে জয়েল কিনারায় পৌঁছে দেন মুশফিক। দল যখন জয় থেকে মাত্র এক রান দূরে ঠিক তখনই ফিরেন প্রসান্না। ১৫ বলে ২৩ রান করা প্রসান্নাকে ফিরিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৪৫ রানের জুটি ভাঙ্গেন মিরাজ। এটি তার দ্বিতীয় শিকার। শেষ পর্যন্ত মুশফিকই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে ফিরেন বিজয়ী নেতা হিসেবে। ৩০ বলে ৪টি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। চট্টগ্রামের পক্ষে ২টি উইকেট নেন মিরাজ। একটি করে নিয়েছেন নাসুম এবং শরীফুল। ম্যাচ সেরা হয়েছেন খুলনা টাইগার্সের আন্দ্রে ফ্লেচার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফখরুলের প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশিতই ছিল কাদেরের কাছে
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬