নিঃশর্ত ভালোবাসা

শেলী হারিস | মঙ্গলবার , ৬ এপ্রিল, ২০২১ at ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

চিৎকার চেচামেচি করা আমার ভীষণ অপছন্দের। শান্তিপূর্ণ অবস্থান আমার ভালোলাগে। সমঝোতা করতে পারি ভীষণভাবে। সেটা শুধু শান্তি রক্ষার্থে। আমার কিছু খেটে খাওয়া মানুষের সাথে সম্পর্ক নিবিড়। ওরা আমাকে ভালোবাসে। সে ভালোবাসা নিঃশর্ত ভালোবাসা। আমার গৃহকর্মী, আমার কর্মস্থলের পিওন, দারোয়ান, আয়া সকলে। আমি বিত্তবান নই। কোনরকমে খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি ঐ পর্যন্ত। তবে আমার ভালোবাসার মানুষগুলো হয়তো ভাবে আমি বিত্তশালী। দু তিন দিন আগে একটা ফোন পেলাম। একজন ইলেকট্রিশিয়ান বাসায় কোন সমস্যা হলে কাজ করে দিতো। বয়স যতটা নয় তার চেয়ে বেশি বয়সী মনে হয়। আমাদের পাড়ায় ছোট্ট একটা দোকানে বসে থাকতো। যখন যা প্রয়োজন হতো টাকা দিতাম সে নিজেই কিনে কাজ করে দিত। আমি কখনো হিসাব চাইতাম না। আমি জানি আজগর আলী মিথ্যা বলবে না। ওয়ারী আমার পুরানো জায়গা। এখন আর সেখানে থাকছিনা বাসা বদল করেছি। আজগর আলীর সাথে অনেক দিন দেখা নেই। সে অরিজিনাল বিহারের লোক। লেখাপড়া জানা, রেলওয়েতে চাকরি করতো, চাকরি নেই, ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালায়। হঠাৎ তার ফোন, আমাকে ডাকে মাস্টার আপা। বললো “আমাকে কিছু সাহায্য করেন। এঙিডেন্ট করে পা ভেঙ্গে গেছে হাড় জোড়া লাগছে না। এখন সে মিরপুর থাকে। দোকানে বসে বসে ইংরেজি ম্যাগাজিন পড়তো। আমার সাধ্যমতো বিকাশ করে দিলাম। আমার আরো সামর্থ্য থাকলে আরো দিতাম। আমার এ কটা টাকায় বেশি কিছু হবে না। তার আরো অর্থের প্রয়োজন। তবে খুশি হলো আজগর মিস্ত্রি, ভালো মানুষ। ভালো থাকেন আজগর মিস্ত্রি। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছোট হয়ে আসা আমাদের মানসিকতা থেকে মুক্তি চাই
পরবর্তী নিবন্ধকৈবল্যধাম ট্রেন অপারেশন