নবজাতক ছেলেকে অনাহারে রেখে মেরে ফেলা রুশ বাবার কারাদণ্ড

| বৃহস্পতিবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ at ৭:০২ পূর্বাহ্ণ

না খাইয়ে শুধুমাত্র সূর্যালোকে রেখে ছেলেকে ‘সুপারহিরো’ বানাতে চেয়েছিলেন রাশিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ম্যাক্সিম লিউতি। কিন্তু ছোট্ট কসমস বাবার এই পাগলামীর ধকল সহ্য করতে পারেনি। চরম অপুষ্টি এবং নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে মাত্র এক মাস বয়সে শিশুটির মৃত্যু হয়।

যুক্তরাজ্যের সংবাদ সংস্থা মেট্রো জানায়, গত বছর ৮ মার্চ রাশিয়ার সোচির একটি হাসপাতালে মারা যায় কসমস। ছেলেকে হত্যার দায়ে পুলিশ লিউতি ও তার বান্ধবী কসমসের মা ওকসানা মিরোনোভাকে গ্রেপ্তার করে। খবর বিডিনিউজের।

মিরোনোভা বাড়িতে তার ছেলেকে জন্ম দিয়েছিলেন। কারণ, লিউতি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। কসমসের জন্মের পর লিউতি তাকে মায়ের বুকের দুধ পান করতে দেয়নি বলে জানান মিরোনোভার কাজিন ওলেসিয়া নিকোলায়েভা। তিনি বলেন, সে (লিউতি) তাকে বাচ্চাকে বুকের দুধ না খাওয়াতে বাধ্য করেছে। লিউতির বিশ্বাস ছিল সূর্যালোক থেকেই শিশুটি খাবার পাবে। ওকসানা গোপনে শিশুটিকে বুকের দুধ পান করানোর চেষ্টাও করেছে। কিন্তু সে ম্যাক্সিমকে খুব ভয় পেত।

মেট্রোর খবরে বলা হয়, লিউতি নিজের সন্তানের উপর পরীক্ষা চালাতে চেয়েছিল। দেখতে চেয়েছিল শুধু সূর্যালোক থেকে মানুষ বেঁচে থাকার মতো খাবার পেতে পারে কিনা। যাতে সে পরবর্তীতে এ বিষয়ে মানুষকে উপদেশ দিতে পারে। খাবার না দেওয়া ছাড়াও লিউতি তার ছেলেকে ঠান্ডা পানিতে গোসল করাত। তার বিশ্বাস ছিল এতে ছেলের শক্তি বাড়বে। লিউতির এসব কর্মকাণ্ডে শিশুটি দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত তাকে সোচির একটি হাসপাতালে নিয়ে যেতে রাজি হয় তার বাবা। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই কসমস মারা যায়। পুলিশ লিউতি ও মিরোনাভাবে গ্রেপ্তার করে। তারপর থেকে আদালতে তাদের বিচার চলছিল। প্রথমে সবকিছু অস্বীকার করেন লিউতি। এমনকি এই জানুয়ারি মাসেও তিনি নিজের মুক্তির প্রত্যাশা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেন।

তবে শেষ পর্যন্ত আদালতে চূড়ান্ত শুনানির দিন তিনি নিজের ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং এ সপ্তাহে তার সাজা ঘোষণা করা হয়। তাকে সাড়ে আট বছরের কারাদণ্ড এবং প্রায় ৯০০ পাউন্ড সমপরিমাণের অর্থ জরিমানা করা হয় বলে জানায় মেট্রো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিয়ানমার সীমান্তের কাছে সামরিক মহড়া জোরদারের পরিকল্পনা চীনের
পরবর্তী নিবন্ধ৭৫ বছরে এমন বৃষ্টি দেখেনি আরব আমিরাতের মানুষ