নগরীর আকবরশাহ এলাকায় মাদকাসক্ত বাবার হাতে জিম্মি হওয়া নবজাতকসহ তিন শিশুকে ঘরের টিনের বেড়া কেটে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আকবরশাহ থানার পুলিশ এই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশকে এ সময় সহযোগিতা দেয় ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম। রোববার মাঝরাতে নগরীর আকবরশাহ থানার রেলবিটের পাশে মুক্তকণ্ঠ মাঠ এলাকার বস্তির এক বাড়িতে এই ঘটনা ঘটেছে। মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে নিজের শিশুকে জিম্মি করে রাখা ৩২ বছর বয়সী ওই যুবকের নাম মোহাম্মদ সুমন। তার হাতে জিম্মি থাকা তিন শিশুর একটি ছিল মাত্র পাঁচদিনের নবজাতক। অন্য দুই শিশুর মধ্যে এক কন্যাশিশুর বয়স ৪ বছর, ছেলের বয়স ৭ বছর।
এ বিষয়ে আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রাব্বানী বলেন, ভোরবেলায় আমরা তিন শিশুকেই অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছি। পরে তাদের থানায় নিয়ে গিয়ে মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওসি বলেন, মাদকাসক্ত পিতাকে আটকের পর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে মধ্যরাতে সেখানে মাদকাসক্ত এক পিতা পাঁচদিনের নবজাতকসহ তার তিন শিশুকে জিম্মি করে রাখে নিজের ঘরেই। পুলিশ ওই বাড়ির চারপাশ ঘেরাও করে রাখলেও ভেতরে ঢুকতে পারছিল না। কেউ ঘরে ঢোকার চেষ্টা করলে তিন শিশুকেই খুন করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। পরে সেখানে এসে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িও। হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশের একটি গাড়িও বাড়িটির পাশে প্রস্তুত রাখা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মাদকাসক্ত হওয়ায় তিনি প্রায় প্রতিদিনই স্ত্রীকে মারধর করেন। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকেও তিনি বেদম মারধর করে স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দেন। এরপরই মোহাম্মদ সুমন নিজের পাঁচ দিন বয়সী নবজাতককে একহাতে রেখে অন্য হাতে ছুরি নিয়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন। আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে সুমন তার বাকি দুই শিশুসন্তানসহ সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ সময় তিনি ঘরের টিনের দরজাও ভেতর থেকে আটকে দেন। খবর পেয়ে শনিবার রাত দেড়টার দিকে আকবরশাহ থানার পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। তারা সুমনের ঘর চারদিক থেকে ঘেরাও করে রাখে। কিন্তু পুলিশ ভেতরে ঢুকতে পারছিল না। কয়েক দফা ঢোকার চেষ্টা করলেও তিন শিশুকে হত্যার হুমকির মুখে পুলিশ পিছিয়ে আসে। পরে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে।