নতুন ঘর, নতুন জীবনের স্বপ্ন

পুলিশের উদ্যোগে ১৬ থানায় ঘর পাচ্ছে ১৬ পরিবার।। আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী

বাঁশখালী প্রতিনিধি | রবিবার , ১০ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

জোহরা বেগম। বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ির জঙ্গল নাপোড়া এলাকার বাসিন্দা। স্বামী মনির আহমদ যখন তাকে ফেলে চলে যায় তখন জোহরা বেগমের গর্ভে ছিল একটি সন্তান। সে সন্তান মো. হোছেন বর্তমানে নাপোড়া শেখেরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনির ছাত্র। গৃহহীন ও স্বামী পরিত্যক্ত জোহরা বেগম জঙ্গল নাপোড়া পাহাড়ি এলাকায় কোনভাবে জীবনযাপন করতেন। ছিলো না নিজের কোনো ঘর। কিন্তু তার দুঃখ কিছুটা কমাতে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বাঁশখালী থানা পুলিশ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহহীনদের বাড়ি প্রদান কার্যক্রমের অংশ হিসাবে জোহরা বেগমকে একটি বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছেন থানা পুলিশ। এতে রয়েছে টিউবওয়েল ও বৈদ্যুতিক সংযোগ। পুলিশ জানায়, বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপির দিকনির্দেশনা অনুযায়ী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গৃহহীনদের জমি ক্রয় করে একটি করে গৃহ নির্মাণ করার প্রদক্ষেপ শুরু হয়। যা বাস্তবায়ন হচ্ছে আজ। রোববার এই কার্যক্রমে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জোহরা বেগম বলেন, আমার স্বামী মনির আহমদ আরেকটি বিয়ে করে যখন আমাকে ফেলে চলে যায় তখন গর্ভে ছিল একটি সন্তান। সেই সন্তানকে নিয়ে থাকার কোনো জায়গা ছিলো না। পরে পুঁইছড়ির চেয়ারম্যান সুলতানুল গনি চৌধুরী লেদু মিয়ার পাহাড়ি পরিত্যক্ত জায়গায় ভেড়া দিয়ে থাকার ব্যবস্থা করি। কিন্ত কিছুদিন আগে সেই জায়গা টাও ছেড়ে দিতে হয়। ফলে আবারও রাস্তায় থাকতে হচ্ছে। এমন সময় বাঁশখালী থানা পুলিশ আমার পাশে অভিভাবকের মত এসে দাঁড়িয়েছে।
জোহরা বেগম আরো বলেন, আমার দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আমির হোসেন একসময় আমার সাথে বউসহ ছিল। পরে তার স্ত্রী, ২ মেয়ে ও ১ ছেলেকে রেখে সেও চলে যায়। এখন তার বউ বাচ্ছাকেও আমাকে দেখতে হচ্ছে। আমি সড়কে মাটি কাটার কাজ করি। তাতে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকার মত পাই। সেটা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালাতে গিয়ে মাঁথা গোজার ঠাই করার মত কোনো সুযোগ ছিল না।
তিনি বলেন, বাঁশখালী থানা পুলিশ জায়গা কিনে আমাকে যে থাকার একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশের সকল সদস্যদের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, পুলিশ নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে মানবিক কাজও করে তার প্রমাণ জায়গা ক্রয় করে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া।
এদিকে বাংলাদেশ পুলিশের সারা দেশে নিজস্ব অর্থায়নে দেওয়া গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রতিটি থানা ও জেলার সাথে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী। চট্টগ্রামের পুলিশের সাথে প্রধানমন্ত্রীর এ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে খালি গলায় স্বরচিত গান পরিবেশন করবেন বাঁশখালীর গন্ডামারা এলাকার আকতার হোসেন ও নাছিমা বেগমের পুত্র রিঙাচালক কপিল উদ্দিন (২৮)। সে রিঙা চালনোর পাশাপাশি খালি গলায় স্বরচিত গান গেয়ে বেড়ায়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তার স্বরচিত গান ইতিমধ্যে সবার নজর কেড়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোনোভাবেই যেন কেউ হয়রানির শিকার না হয়
পরবর্তী নিবন্ধআমাদের যুদ্ধ অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে