নগরে মার্কেটগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তায় ১১ সিদ্ধান্ত

পুকুরগুলো অবৈধ দখলদারমুক্ত করা হবে।। ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিশেষ সভা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১১ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিশেষ সভা গতকাল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। সভায় মার্কেটে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে ১১টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

জেলা প্রশাসক বলেন, জাতীয় দুর্যোগসহ অগ্নি দুর্ঘটনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমাদেরকে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বঙ্গবাজারের মতো পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মার্কেটে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে গ্রহণ করা ১১ সিদ্ধান্তের মধ্যে আছে, প্রতিটি দোকানের ফায়ার লাইসেন্সসহ অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র সংরক্ষণ করতে হবে। অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র হালনাগাদ থাকতে হবে। দোকানদার/কর্মচারীগণকে ফায়ার সার্ভিস থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবহার করতে হবে। প্রতিটি মার্কেট সমিতির অগ্নি নির্বাপণসহ জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় নিজস্ব প্ল্যান থাকতে হবে। মার্কেট সমিতি বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা লাগাবেন। সিসি ক্যামেরা নজরদারির জন্য মার্কেট সমিতি ৩৪ জন কর্মচারী নিয়োগ দেবেন। কর্মচারীরা পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করবেন। ডিস ও ইন্টারনেটের লাইন আন্ডারগ্রাউন্ডে নেয়ার জন্য মার্কেট সমিতি কর্তৃক ডিস ও ইন্টারনেটের মালিকদের অনুরোধ করবেন। ব্যক্তি মালিকানাধীন মার্কেটসহ সিটি কর্পোরেশন, সিডিএর নিয়ন্ত্রণাধীন মার্কেটসমূহের ব্যবসায়ী সমিতিকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে। যাতে মার্কেটে রিজার্ভ ট্যাংক, গাড়ি পার্কিং এবং জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। প্রতিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতি তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভলান্টিয়ার নিয়োগ করবেন। তারা মার্কেট/বাজার পরিদর্শন করে স্ব স্ব বাজার ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিকে নিরাপত্তার তথ্য জানাবেন।

ফুটপাত অবমুক্ত করার জন্য সিটি কর্পোরেশনকে পত্র প্রেরণ করা হবে। বৈদ্যুতিক লাইনের তার বর্তমান সময় উপযোগী করার জন্য বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে পত্র প্রেরণ করা হবে। জহুর হকার্স মার্কেট দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে হওয়ায় উক্ত দুটি পাহাড় হতে বড় বড় ট্যাংক বসানোর জন্য মার্কেট প্রতিনিধি নিজস্ব ব্যবস্থাপনা এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

মহানগর এলাকার পুকুরগুলো বেদখল হয়ে যাচ্ছে। পুকুরগুলো অবৈধ দখলদার মুক্ত করে চারদিকে হাঁটার জন্য ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ করতে হবে। এ কাজ করার জন্য সিএমপি ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি ঠিম গঠন করা হবে। এসব সিদ্ধান্তের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সভায় চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ, জহুর হকার্স মার্কেট, রিয়াজুদ্দিন বাজার, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, টেরীবাজার, তামাকুমন্ডি লেইন, নুপুর মার্কেটসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল মার্কেটের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ড।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় ই’তেকাফ পালন করা হয়
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীর বুকে চর, কাপ্তাইয়ে নৌ চলাচলে দুর্ভোগ