নগরে আরো তিন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ

বৃহত্তর চট্টগ্রামে সিলগালা আরো ১৫

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩০ মে, ২০২২ at ৮:১১ পূর্বাহ্ণ

 

 

নগরীতে বেসরকারি আরো একটি হাসপাতাল ও দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ মোট তিনটি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়। গতকাল রোববার দুপুরে পরিচালিত অভিযানে লাইসেন্সসহ কোনো কাগজপত্র না পাওয়া, অপরিষ্কারঅপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সেবা প্রদানসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। এছাড়া বৃহত্তর চট্টগ্রামের জেলাউপজেলায় পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে আরো ১৫টি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়া হয় বলে আজাদীর প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। নগরে গতকাল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছেনগরীর নাজিরপুল পাঠানটুলী এলাকার মিডপয়েন্ট হসপিটাল এন্ড মেটারনিটি সেন্টার, হালিশহরের বড়পুল এলাকার হাইটেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কোয়েস্ট মেডিকেল সার্ভিস এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অভিযানে মিডপয়েন্ট হসপিটালের সাথে সংযুক্ত মিডপয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারও বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। তবে পরবর্তীতে যথাযথ কাগজপত্র জমা দেয়ায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি চালু রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী আজাদীকে বলেন, পরে কাগজপত্র জমা দেয়ায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি চালু রাখার অনুমতি দিয়েছি। তবে ওদের (মিডপয়েন্ট) হসপিটালটির কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অভিযান সূত্রে জানা গেছে, মিডপয়েন্ট হাসপাতালের লেবার রুম ও লেবার টেবিলের অবস্থা শোচনীয়। মানসম্মত নয়। হাসপাতালের ১৬ নার্সের মধ্যে মাত্র ৪ জন নার্সিং (ডিপ্ল্লোমা) পাস। বাকিদের স্বীকৃত কোনো সনদ নেই। পুরো হাসপাতাল অপরিষ্কারঅপরিচ্ছন্ন। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কোনো নিয়োগপত্র নেই। অধিকাংশ চিকিৎসকের বিএমডিসি’র রেজিস্ট্রেশনও নবায়ন ছিল না। এসবের দায়ে হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, হাসপাতালটিতে নতুন করে রোগী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসা শেষ করে ছাড়পত্র দেয়া যাবে।

অন্যদিকে, হাইটেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কোয়েস্ট মেডিকেল সার্ভিস এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোনো ধরণের সেবার মূল্য তালিকা সাঁটানো ছিল না। অভিযানের সময় ম্যানেজার বা দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং মেডিকেল রেডিওলজিস্ট পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে কোয়েস্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি। পরিবেশও ছিল অপরিচ্ছন্ন। এ সব কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত দুটি প্রতিষ্ঠানকেই কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ নেই জানিয়ে এ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান সিভিল সার্জন।

প্রসঙ্গত, আগের দিন (শনিবার) নগরীর ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করে এর মাঝে চারটির কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন সিভিল সার্জন। এ নিয়ে দুই দিনে নগরীর মোট ৭টি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশে ৩ দিনে বন্ধ হলো ৫৮২ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক
পরবর্তী নিবন্ধকাল থেকে মাঠে নামছে জেলা প্রশাসন