ধ্বংসস্তূপের নিচে শত শত পরিবার

মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২৬১ তুরস্ক-সিরিয়ায় শুধুই হাহাকার

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ

উষ্ণতা হিমাঙ্কের নীচে। বরফ পড়ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও শত শত পরিবার। এই ঠান্ডার কারণে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্রমশ কমছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় বিধ্বংসী এক ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে পাঁচ হাজার ২৬১ জনে দাঁড়িয়েছে। দুটি দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচাতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। গত সোমবার ভোরের দিকে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গতকাল মঙ্গলবার জানান, তার দেশে নিহত বেড়ে ৩ হাজার ৫৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে সিরিয়ায় নিহত বেড়ে এক হাজার ৭১২ জন ছাড়িয়ে গেছে। ৯০০’র বেশি মানুষ বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশে নিহত হয়েছে। সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে নিহত হয়েছেন অন্তত ৮১২ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, দুই দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়াতে পারে ২০ হাজার।

তুরস্ক সরকার, হোয়াইট হ্যালমেট ও সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী আহত হয়েছেন ২৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমান করছে, তুরস্ক এবং সিরিয়া জুড়ে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ এই ভূমিকম্পের শিকার হয়েছেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ১০টি প্রদেশে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। বিশ্বের বেশ কয়েক দেশ অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে সহাহতার আশ্বাস দিয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম হিমশীতল পরিবেশ ও তুষারপাতে ব্যহত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রচেষ্টা জোরদার করা হচ্ছে। ৭০টি দেশ ভূমিকম্পে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়েছে।

সোমবার স্থানীয় সময় ভোররাতে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটিতে তুরস্ক ও প্রতিবেশী সিরিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে বহু অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ধসে পড়ে, হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং হাজার হাজার মানুষ আহত ও গৃহহীন হয়ে পড়ে। স্থানীয় সময় প্রায় বেলা দেড়টার দিকে আরও একটি ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন যে এটি ‘আফটারশক’ ছিল না। সোমবার পর পর দুটি ভূমিকম্পের পর তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে পর পর কয়েকটি শক্তিশালী আফটারশক ও কম্পন আঘাত হেনেছে। আফটারশকের ভয়ে অনেকে আবার বৃষ্টি ও তুষারপাতের মধ্যে রাত কাটিয়েছেন।

মঙ্গলবার দিনের আলো ফোটার সাথে সাথে উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত ব্যক্তিদের সন্ধানের কাজ আরও জোরদার করেছেন। উত্তরপশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ত্রাণ সংস্থা হোয়াইট হেলমেটস ইমার্জেন্সি রেসপন্স গ্রুপ বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের বাঁচাতে সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।

ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস। এই দুই শহর এখন ধুলোয় মিশে গিয়েছে। একটি বহুতলও দাঁড়িয়ে নেই। দুই শহরে ২০ লাখ মানুষের বাস ছিল। কত জন মারা গিয়েছেন সেই হিসাব এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। ওই শহর ঘুরে এক সাংবাদিক বললেন, আমরা ভেবেছিলাম পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সেই আতঙ্ক কাটিয়ে এখনও ঘরে ফিরতে পারেননি অনেকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধান আসামি গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধ৮ তলা থেকে পড়ে তিন নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু